কবিতা

শব্দনীল— এর কবিতা

আমার সঙ্গে তার দুরত্ব রাস্তার এধার-ওধার
আমার মাথার উপর চলছে ফ্যান, জ্বলছে লাইট
ওপাশে অন্ধকার আর অন্ধকার,
অন্ধকারের ভেতর মাথার হাত এগিয়ে
একটি শিউলি গাজ লক লক করে ছাড়ছে শুধু পাতা।
মা, আসছে সেপ্টেম্বরে কিছু শিউলি ফুল
তোমার ঘরের উপর দেওয়া ছাড়া
আমার আর কিছু করার থাকছে না।
তুমি ভালো থেকো তোমার ঘরে
আমি আমার।

অর্ধবুড়ো আমপাতায় দুপুর গড়ানো বৃষ্টি এল,
ফোঁটাগুলো ঠিক কপালের কলো টিপ।
তোমাকে দেখার তৃষা পাচ্ছে
তৃষা বেড়ে এই মুহূর্তে আড়াইশো গুণ।

বিপ্লব শেষে মানুষের ভালোবাসার গেন্দা গলায় ঝুলিয়ে
তোমার সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়ালাম
তুমি জানিয়ে দিলে, ঘরে চাল নাই
বাজারে কমেছে টাকার দাম
ছেলেটা অসুস্থ
ভেঙ্গেছে হাতের কাঁচের চুড়ি
আমি মাথা নিচু করে আবার বিপ্লবে নামলাম।
অথচ, আমাকে শেখানো হয়েছিলো বিপ্লবীরা মাথা উঁচু করে হাঁটে।

সংস্কৃতির যুদ্ধ লাগাইলা!
বাংলা আমার, মাটি আমার,
উর্বরভূমির সকল ফসল আমার
আমরা আছি কাঁধে কাধেঁ
তোমার কাছে যেটা হালাল
আমার কাছে হারাম
আমার কাছে যেটা হালাল
তোমার কাছে হারাম
তাতেই সমস্যা?
আমদানি করছো এই মৌসুমি হাওয়ায় নিঃশ্বাস নিয়ে!
তা করো, করো হে যুদ্ধবাজ দেখি কতটা পারো!
জেনে রেখো, বাংলা আমার, মাটি আমার,
জারি-সারি-ভাটিয়ালিও আমার।

৫.

এতটা বিষন্ন নয় সে
লতার রসালো বর্ষা বান তার
সে, অন্ধ বগের সাদা পালকে এক জীবনের
একটু সময়ে বিশ্রাম নিচ্ছে।
অনেক কালের উড়াল পথ তার এ আঘাত।
জানতো, ঈগলেরও ঠোঁট ভাঙ্গতে হয় নিজেকে বাঁচাতে।
অর্ধহারে থাকতে হয় ফিরে আসার বসন্তে।
সে, চোখ বন্ধে টপ করে গড়িয়ে পড়া নিঃসঙ্গতাকে আগলে,
আবারও গুঁজতে পারে নাভির নিচে শাড়ির কুঁচি।
সে, ফেরবে আবার আলতায়
বিষন্নতা নয় তার অলংকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *