নির্বাচিত বারোটি কবিতা।। আহমেদ শিপলু
একশনকে ডাইরেক্ট
চশমা খুলছে এটা একশন
চশমা পরছে এটাও একশন
চশমা ছুড়ে ফেলছে যখন
তখন আর কিছু বলতে হয় না।
সুতরাং জলের অভাব পুরনে টিস্যু ব্যবহারে অভ্যস্ত। ন্যাকাবোকা
সমাজ বাঁধে ক্যাপিটালিজম আখ্যায়। চায়ের আড্ডা জমানো
ড্রয়িংরুম থেকে পা বাড়ালেই রাজপথ। এখন জাঙিয়ার ভেতরে
তাকালেও সন্দেহ হয়!
ভীষণ দুঃখিত হয়ে যেতে ইচ্ছে করে ক্ষণে ক্ষণে, কি করি! কি করি!
এমনটা ভাবার সুযোগ একদমই নেই।
বোগলের যত্ন নেয়ার ফুরসতই যেহেতু পাওয়া যাচ্ছে না! এমনই
ডান্স! এমনই খুল্লামখুল্লা! যেনো ডিনার টেবিলের চারপাশ
জুড়েই গজিয়ে উঠেছে ছিনালপাড়া! বেহায়া চেয়ার একবার যাকে
ধরে, তাকে আর ছুঁতে পারে না পৌষের ভোর। ভাবছি কাকের সাথে
দেখা হলে তুলনামূলক কালোতত্ত্ব নিয়ে আলাপ করা যাবে।
বিকেলটাতো কাটাতে হবে! দশ টাকার রঙচায়ে ঘেন্না ধরে গেছে
সেই কবে! অথচ ঠোঁট, জিভ কি করুণ মানিয়ে নিয়েছে এতকাল!
মগজমহলে যা বাজছে, তা যদি বাজানো যেতো সাত রাস্তার মোড়ে!
তবে নিশ্চয় ত্রিভুবন ছলকে ওঠা জল হতো অমৃত চুমুক। দাঁড়িয়ে
যেতে পারতাম তোমাদের মুখোমুখি! চ্ছালা! কুৎসিত চিৎকারে
সম্ভাষিত চমৎকার খিস্তিখেউড়! যাপনের বেহাপনা!
সুব্রাইতের আখ্যান
আবে হউরের পো কস কি! এমতেই চান্নি রাইত, হের উপ্রে
সুব্রাইত। ল দোস মাইরা আহি! ডাবল হাফ কাচ্চি!
আইচ্ছা ঠিক আছে, হেরপর কিন্তুক ছাম বাজারের চিপাত্থন একখান
মাল নামাইতে হইবো!
হালার্পো! কইলাম না আইজ সুব্রাইত। আইজ মাল টানলেতো
দুজখেও যায়গা অইবো না।
আব্বে! তুই কি বেহেস্ত কনফার্ম কইরা ফালাইছস নিক্কি!
কনফার্ম অইছে কি না জানি না, তয় বন্দিগি চালাইয়া যাইতে
অইবোতো।
নাটকির পো! আমার লগে বন্দিগির আলাপ মারাও! তুমি যে কতবড়
লুইচ্চা, তাতো আমি জানি, অহন সুব্রাইতের নামাজ পইড়া
আল্লারে জমিনে নামাইয়া আনবা!
দেখ, চরিত্র লইয়া ঠেস মারবি না। বেছি কতা না কইয়া ল দুই বাই
মিল্লা কাচ্চি মাইরা আহি। আরে ব্যাট্টা বিল আমিই দিমু! ল, মাল
খাবিতো! খাওয়ামুনে।
অতোটা চাইনি কখনো
অতোটা চাইনি কখনো তাই আকাশ এখনো নীল, মেঘগুলো সাদা
পায়রার মতো, ডানা ঝাপটায় চিল। তোমাদের চাওয়ার উত্তাপে পুড়ে
বৃষ্টিও ছারখার! উদ্যানে আজ জমেছে বর্জ্য, বাগান হয়েছে ভাগাড়।
তোমাদের পাওয়ার লীলায় ভেঙেছে সম্পর্কের জাল, নিখাঁদ প্রেমের
বিপরীতে আজ জীবন টালমাটাল।
কিছুটা চেয়েছে রুদ্র কবি, জ্যোৎস্নায় চেয়েছে ঠাঁই,
আমিও তেমনই পায়ে পায়ে হেঁটে অনেককিছুই পাই। যেভাবে
পেয়েছি বনলতার চিঠি, এখনও নীরারা হাসে, বরুনার কোলে মাথা
পেতে শুই, তেমনই ভালোবাসে।
তোমাদের চাওয়ার গ-ি ছাড়িয়ে এখনো তারারা হাসে, ভোরের
কুজ্ঝটিকা পেরিয়ে উদিত সকাল আসে। তেমনই করেই দুপুর পেরোই
ধানসিঁড়িটির তীরে, তোমাদের লোভ পায়নি আবাস মায়াময় শান্ত
নীড়ে।
ক্রমশ দ্রুতগামী হচ্ছে অতীত
কবরকে কফিনে পুরে দিয়ে মাটিরা সব উধাও! এখন লাশেরা হন্যে হয়ে
ছুটছে মাটির সন্ধানে। আগরবাতি থেকে ধোঁয়া বেরুচ্ছে,
চারিদিকে মৃতগন্ধ্যানদীর ঘ্রাণ! যারা শিরনীর জন্য অপেক্ষায় ছিলো,
তারা টের পেলো না শোকের মনস্তাপ।
ক্লান্ত হচ্ছো? হতে থাকো, এরকম ক্লান্তির ইতিহাস রেখে গেছে
যারা, তাদেরকে কলঙ্কিত করেছে প্রজন্মের যৌবন। দেহকে আগলে
রাখলে জীবন প্রবাহিত নদীর গল্প। অথচ নদীরা মরে গেলে রেখে যায় জলের কঙ্কাল।
ছেড়ে আসা স্টেশনের কোলাহল দ্রুতগামী অতীত মনে হয়, তোমাদের
হল্লা পেরিয়ে ক্রমশ দ্রুতগামী হচ্ছি। বগি থেকে ছিটকে যাচ্ছে বগি,
একই পাতের উপর ছুটছি পরস্পর বিচ্ছিন্ন।
তারপর একদিন তোমার তোমাদের ঘুম ভাংবে ঠিকই, কিন্তু রাত
ফুরোবে না। অনন্ত রাত্রির সুড়ঙ্গে ঢুকে পড়া শেষে থাকবে শুধু
বাদুড়ের ডানা ঝাপটানো।
মঞ্চায়ন হচ্ছি প্রতিদিন
মঞ্চায়ন শেষ হলে ফের অন্ধকার। ফিরে এসে দাঁড়ালাম সকলে।
করতালি পেরিয়ে পর্দা নেমে গেলো। মিনিটের কাঁটার গতি এসে থামলো
গ্রিনরুমে। দর্শক ফিরে যাবে নিজ গন্তব্যে, আয়োজন সমাপ্ত হলে
লাইট সাউন্ড গোছানো হবে, কুশীলবদের সকলেই খোলস পালটে
ফিরে যাবে নিজ চরিত্রে। যাপনের হল্লায় মেতে উঠবে হয়তো।
কেউ কেউ থাকে, মুখ ও মুখোশ আলাদা করা যায় না। ফিরে আসে
গন্তব্যহীন নিরন্তর পথে। পাঁজরের সবকটি হাড় জানে বয়ে বেড়ানোর
গ্লানি। যাপনের ভার ক্রমশ জাপটে ধরে। মানুষ আর প্রতারক শব্দের ভিন্নতা মাত্র।
চোখের কোনে করুণ চাহনি রেখে হাসতে পারার জন্য এইসব আয়োজন।
জমজমাট বাজারে লন্ড্রি হচ্ছে কুঁচকানো সমাজ
আপেল সোসাইটি পাহারা দেয় আমলকি, আর চাকু হেলান দিয়ে
ঘুমাচ্ছে; ঘুমাতে হয়। চাকুরা অনেক ক্লান্ত, তার বুকে লেগে
আছে রক্ত। আবিষ্কারের পর থেকে যতো বয়স তার, রক্তের বয়সও…
ধার করা পোশাকের মতো জৌলুশ। জমজমাট বাজারে লন্ড্রি হচ্ছে
কুঁচকানো সমাজ। নর্দমার জলে ধোলাই পরিপাটি মর্যাদা। এসব
নিত্য পণ্যের বাজার দরের মতোই ক্রমশ ঊর্ধ্বগামী।
ভীষণ উচ্চতার দিকে ছুটতে চাওয়া মানুষের স্রোতে কাটা পড়ে
গাছ, চাপা পড়ে নদী আর শিশুদের শৈশব। মিছিল ফেরত লোকেরা আর
ফিরতে পারে না স্বাভাবিক স্রোতে। মুষ্টিবদ্ধ করতলে কেবলই জমাট
ভিসুভিয়াস উত্তাপ।
সুগন্ধি ভ্রমণ
বিভ্রমের জানালায় ছিলো ডুমুরের নৈঃশব্দ্য। দ্যুতি দুপুরের কাছেই
শপথ নিই, সঁপে দিই বিকেলের আভা। পথজুড়ে এতো রাত! এতো
কোলাহল! কেবলই প্রতারণাময় ভোরের আশ্বাস! আজকাল ঘুমাতে
যাবার পর শৈশব পেয়ে বসে খুব।
রাতের কোলাহল দ্রুতগামী ষাড়ের ছুটে চলার দৃশ্য যেনো। ঘুমকে
মনে হয় অশুভ সম্মোহন। পদশব্দের আতঙ্কে ঘুমভাঙা লোকালয়।
ডাকাতদুপুরে খুন হয়ে পড়ে আছে নির্জনতা। লৌকিক বাসনায়
তবু বুঁদ হতে চাই, যেহেতু গলির অন্ধকার চিরকাল চোরের দখলে।
সফেদ সকাল হাতে নিশ্চয় দাঁড়াবে কেউ। আপাতত হাত বাড়াও,
দিগন্তের দিকে চোখ রেখে শুরু হোক আমাদের সুগন্ধি ভ্রমণ।
প্রমোদবিহারের হল্লায় নিশ্চয় কেটে যাবে বিভ্রমের জঞ্জাল।
পরস্পর পানপর্বে আমরা ভুলে যাবো হাতে হাতে গেলাস ভর্তি রক্ত!
ভাঁটফুল খুড়ছে অজানা বাংকার
পারিজাতবিকেল থেকে খসে পড়ছে লাল, তপ্ত বসন্ত। কানের পাশ দিয়ে
ছুটে যাচ্ছে ইউক্রেন। বুকের পাশ দিয়ে বইছে ফিলিস্তিন। গাজা
উপত্যকার ক্রন্দন বসে থাকে বালিশের পাশে। ঘুম রেখে এসেছি
বসনিয়ায়। সার্বিয়ান গণহত্যার রক্ত লেগে আছে জাতিসংঘের পতাকায়।
তোমাদের আলাপ শেষ হলে আমরা বেড়াতে যাবো শিমুল বনে। সঙ্গে
নেবো জীবনানন্দ আর পালিত বিড়াল। আমাদের সন্তানতুল্য মায়ার পরশ
রেখে আসবো পাহাড়ের অরণ্যে। যেহেতু এখনও উদ্বোধনী পর্বে
আমলা ও নেতার হাত থেকে উড়ে যায় ক্রয়কৃত পায়রা। শ্যামল প্রান্তরে
খুব গোপনে বাজছে এ কোন দামামা! লক্ষ্মী পেঁচার চাহনি কেন
এতটা সন্দেহজনক! গভীর হাওয়ায় শুনি অজানা যুদ্ধের গুঞ্জন। শিশ দিয়ে
উড়ে যায় স্বয়ংক্রিয় মিসাইল। ঘাড়ের উপর তপ্তশ্বাস! আতঙ্কের নাম
ক্যামিকাজি ড্রোন। টর্পেডো ছুটে যায় জলের তলদেশে!
কথা ছিলো সাজেক ভ্যালি যাবো। সমুদ্রস্নান থেকে উঠে এসে
পোহাবো আরাকানী রোদ! আমাদের গা ভর্তি গ্লাণি! দাঁড়াবো
ঋজুক ঝরনার তলে, নাফাখুমের স্রোতে পবিত্র হবো! কড়জোরে ক্ষমা
চাইবো পাহাড়িদের কাছে। জ্যোৎস্নায় মজে যাওয়া রাতের শেষ
প্রহরে হাস্নাহেনার সৌরভ, জানালার কাছাকাছি কোথাও
নিশীপক্ষীর ডাক। এসব রেখে খুড়তে হবে ট্রেঞ্চ! বাংকারে বাংকারে
ফের চাপা পড়বে ভাঁটফুলের বিকেল, রেললাইনজুড়ে শরণার্থী সন্ধ্যা।
পেন্টাগনি মেঘে ক্রমশ ঢেকে যাচ্ছে ‘ঝলসানো রুটি’, কুয়াশা
ভেদ করে কারা ছুটতে চায়! বেপথু পথিক সঙ্গী হলে তীব্র হয় অস্তিত্বের সঙ্কট!
সাইবেরিয়ায় ঘনো হবে শীত। পরিযায়ী পাখির জন্য তবে কি
অপেক্ষা করে থাকবে না শাপলার বিল? তোমাদের সভা শেষ হলে আমরা
দলবেঁধে পাখি দর্শনে যাবো। ওড়ার ক্লান্তি শেষে তাদের কাছ থেকে
শুনবো ডন বাস, মারিও পোল আর কিয়েভের ঘাসের গল্প। ট্যাংকের ঘরঘর
আর জ্যাভেলিন এন্টি-ট্যাংক মিসাইল সিস্টেম কতোটা হত্যা-
পারঙ্গম! খারকিভের ফুলেরা আজও দোলে বসন্তের হাওয়ায়? পাখিদের
সভায় কাটানো ভোরে শুনবো সেইসব যুদ্ধের আখ্যান।
বিন্দু ও চন্দ্র
চন্দ্রবিন্দুর ভারে নতজানু গাঁ। ঘাড় থেকে নামালেই মুক্ত হয় গা।
এদিকে রা থেকে বিন্দু সরে গেলে সামনে অপেক্ষা করে ল। ভীষণ অশ্লীল
আতঙ্ক পেয়ে বসে! চন্দ্র আর বিন্দু কতটা পরনির্ভরশীল, কোনো বর্ণ
মুখ ফিরিয়ে নিলেই তা দৃশ্যমান।
পেঁচার চোখ থেকে সরে যাবে সন্ধ্যা, ইঁদুরের আনাগোনা হবে
দৃশ্যমান। চন্দ্রময় রাতের কুলুঙ্গিতে আশ্রিত অন্ধকার ঘড়ির কাঁটার
মতো টিক টিক, টিক টিক…
পাঁচালীর আসর থেকে কবির আর্তনাদ অথবা হুঙ্কারে কাঁপে
জোঁকের মতো রাত। রক্ততৃষ্ণায় লেপ্টে থাকে পায়ে। ক্রমশ ঘনীভূত পথের
প্রান্তে দিগবিদিক ভ্রান্তিপাঠ। পা ঝাড়া দিয়ে ফেলতে হবে বিন্দু ও চন্দ্র।
ক্যাম্প থেকে ফেরা মানুষেরা
কলারে লিপস্টিকের দাগ আর পিঠে লম্বা চুল নিয়ে বিবাহিত পুরুষের
বাড়ি ফেরার মতো কলঙ্কিত কালের কুয়োয় পড়ে গেছে বসন্তচাঁদ।
কুহু ডাকা কোকিলের সঙ্গমইচ্ছা উবে যায় রোদ চুরি যাওয়া দুপুরে।
মানুষ পুরুষেরা সতীত্বের পরীক্ষায় বিছিয়ে রাখে ধবল চাদর।
বিছানায় জ্যোৎস্না গড়ালে কবি শুনতে পায় ঘাই হরিণীর ডাক।
আজো ক্যাম্প পেতে আছে ক্যাপিটাল দানব। পুরুষ প্রেমিকেরা
ব্যর্থ হয় চিরকাল।
কোথাও মানুষ আজ হতেছে শিকার, হরিণেরা বিলুপ্তপ্রায়। মানুষের
বাগানজুড়ে খুনিদের সমাবেশ। এখানে জীবনানন্দ থাকে না আর,
একদা আসতেন এই পাড়ায়, নিরিবিলি জ্যোৎস্নায়। এখন কেবলই
বন্দুকের শব্দের চেয়ে বেশি দ্রুতগামী মৃত্যুদূতের আনাগোনা।
কোথাও গভীর জনারণ্যে পড়ছে বোমা। উদ্বাস্তু মানুষের আহাজারি
ভেসে থাকে টাইমলাইনজুড়ে। মানুষ হতেছে শিকার, এই কথা হবে না লেখা।
মৃগীরা সকলেই প্রেমিকা ছিলো কি না, জানা হবে না। ঘ্রাণের
মতোন উপস্থিতি তার টের পাই পুকুরঘাটের নৈঃশব্দ্যে। দুপুরজুড়ে ওই
মৃত মৃগদের মতো আমরা সবাই।
জানালা ভেদ করছে বিস্ফোরণ
তীর বিদ্ধ হরিণের মতো আহত দুপুর। মেঘের প্রলোভনে ডানার উড়াল
উড়াল জীবন। বন পোড়া ঘ্রাণের মধ্যে ঘুমের আয়োজন। সভ্যতার
বালিশে কান্নার জল আর নির্ঘুমের ইতিহাস।
কোথাও কেঁপে উঠছে বহুতল, ফ্ল্যাটবাড়ির জানালা ভেদ করছে
বিস্ফোরণ, আকাশজুড়ে লেলিহান শীষ। স্মরণার্থী স্রোতে মানুষের
কোলাহল। উদবাস্তু শিবিরে কোনো প্রার্থনাই যথেষ্ট নয়।
ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে বাড়ানো হাতের আহবান পৌঁছায় না
বিশ্বসভায়।
থালা হাতে খাবারের লাইনে হট্টগোল হলে, মানুষের মনে দয়া হয় খুব।
মানুষ ভাবে সে তিনি এবং তাঁরা ভীষণ দয়ালু। স্রষ্টাও যেমন…
নৈঃশব্দের কুচকাওয়াজ
শূন্য রেস্তোরাঁ। উপুড় চেয়ারের পাশে চকচকে স্পিøন্টার। অদূরে
বিস্ফোরিত গর্ত… মানুষ কোনোকালেই ছিলো না হয়তো। দেয়ালের
পোড়া চিহ্ন, ভাঙা ফাটলের মধ্যে আটকে গেছে সময় অথবা
দুঃসময়ের চিৎকার!
মৃত ঘাসের মাঠে খেলাদের কাল ফুরিয়েছিল আগেই, তারপর লেফট
রাইট, লেফট রাইট। গোলাপ বাগানে যদি ঢুকে পড়ে মহিষের পাল,
তখন শিল্প এবং কলার মাঝখানে কেন ঢুকে পড়বে না সামরিক
প্রজাপতি, কেন সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকবে না কনভয়, জল কামান।
প্রজাদের পতি ছাড়া যেহেতু চলে না, যেহেতু স্লোগানের ভেতর
থেকে শোনা যায় আর্তনাদ! কান্নার রোল ওঠে মৃতদেহ ঘিরে।
সতীর্থ বিয়োগের বেদনা যখন তাড়া করে, তখন অনিবার্য হয় যুদ্ধ।
আর তারপর সেই পায়া ভাঙা চেয়ারের মতো অপেক্ষার সামনে সারি
সারি কফিন, নাগরিক নৈঃশব্দের কুচকাওয়াজ। স্তব্ধতায় বিমূঢ় জনপদে
নামে শরণার্থীর ঢল, ভাঁজকরা তাবু কাঁধে নিয়ে ছুটতে হয় নো
ম্যান্স ল্যান্ডের দিকে, নিরাপদ আকাশের তলে।
আহমেদ শিপলু
ঢাকা
জন্ম : ১৭ জুন ১৯৭৬
