জেবুননাহার জনি।। কবিতা
মেঘ থম থম করে
কালকের দিনের মতো-
আজকের দিনটা হয় না,
আজকের দিনের মতো-
কালকের দিনটা হয় না…
হিম বাতাসে মেঘের গর্জন
বারংবার ঝড়ে পড়ে প্রিয় ফুল
আকুলতায় অতলের আহবান
মেঘ থম থম করে
নিরবতার আড়ালে বিশাল আকাশ
আকাশের চাঁদকে তুলে আনতে স্তব্ধ সময়
তাড়না শব্দে তাড়াহুড়ায়
মুখরিত গানে বৃষ্টি নামে
বেনিয়াহসকলার ময়ূর নাচে
রাত্রির এমন কলরবে তুমিও আসো চাঁদ ধরায় নেমে
কথা হবে মুষলধারে মন জ্যোৎস্নায় শিশির ভেজা আলিঙ্গনে
ঘোলাটে গল্প
বহমান নিয়ম ভেঙে রুপালি বসন্তে
অনুভূতির প্রথম শীতল রং বুনে
তোমার নিশানায় রচিত আমি
একটা ঘোলাটে গল্প হয়ে নিম্নশিখরে
বৃষ্টিশ্রুত চোখের ইশারায়
বিষণ্ণ বাতাসে মৃদু প্রসারী আলাপন
শিথিল সবুজ একপাল আশায়
অসমতলে হোঁচট খায় কম্পিত মন
অতল স্পন্দন মোহনায় দানা বেঁধে
কেঁপে ওঠা ভাবনার স্তব্ধতায়
আরো কাছে এসে কখনো খসে পড়ে জীবন
নিশান বিচরণ রণাঙ্গনে কুয়াশা মাখানো ভোরে
চঞ্চলা চোখে মায়াবী হাসির শব্দমালায়
অকপটে খুলে যায় জলপ্রপাতের তপ্ত অধর
বিরান পথের কাশবন
অসময়ের অবেলায় তুলে এনেছি একমুঠো কাশফুল
আবারো হারিয়ে গেল রংধনু নাচের ধ্রুপদী রং
বেজে ওঠে বারবার বিসমিল্লাহ খানের স্বপ্ন সানাই
যে নিজেই ধরা দেয় না তার পেছনে আর কেন ছোটা?
তোমার বাড়ি গিয়েও ফিরে এসেছি
তবু কড়া নাড়িনি দরজায়
যদি ভুল ভেঙে যায়
থাক না কিছু অশ্রুমাখা গান
বৃষ্টির কলরবে বুদবুদে অপেক্ষার কলতান
বিরান পথের কাশপাতায় কোনো এক বরষায়
ভিজবে ফের কাশবন
কখনো যদি দেখা হয় তোমার আমার…
অভিমানী জ্বর
প্রেরিত, তোমাকে
পৃথিবীর ষড় ঋতুতে কোনো ব্যাথা পেলে
আজও তোমাকেই প্রয়োজন
চারকপালে হাত রেখে তুমি বলবে,
‘এখনই জ্বর সেরে যাবে-
উষ্ণতায় উষ্ণতা কাটে’
আর যাদুর মতই তা সত্যি হবে আবহশাস্ত্রে
শিহরিত সংক্রমণে খোপার বাঁধন
আলগা হতে হতে খুলে পড়বে
আবেষ্টিত ঘামে ভিজবে নিবেদিত অষ্ট প্রহর
প্রোথিত অভিমানী জ্বর
তবু পত্রহীন
বৃথা নীল খাম,
স্পন্দনশূন্য নিশুতির রণ কৌশল
অন্তরিত বিভোরে তুমি নেই… তুমি নেই…
তাই জ্বরও সারে না
তুমি রবে নীরবে
নিরন্তর ভ্রান্তির সিজোফ্রেনিয়ার আবরণে
তবু রবে নীরবে
প্রায়শ্চিত্তের মোহে সময়ের স্টেশনে
তবু রবে নীরবে
প্রহরের নির্জনে বয়ে যায় কনে দেখা আলো
তবু রবে নীরবে
বিষাদের সন্তর্পণে ধূসরনিশুতি
তবু রবে নীরবে
হাহাকারের সন্ধিতে নিভৃত ছাই উত্তাপে
তবু রবে নীরবে
স্মৃতির কারুকার্যে ভালোবাসা উপচে পড়ে
তবু রবে নীরবে
স্বপ্নমুখর প্রতিচ্ছায়ার মোড়ক উন্মাদনে
তবু রবে নীরবে
অভিমানের অনুবাদে রক্তগোলাপ ফোটে
তবু রবে নীরবে
লেনদেনের সমীকরণে যাই যত দূরে
তবু রবে নীরবে
দীঘল অনুতাপে অনুধাবনের অপেক্ষায় নিশ্চুপে
তবু রবে নীরবে…