ছোটগল্প

ছোটগল্প।। ভূত মানবী।। রনি রেজা

কাঠমিস্ত্রিরাও কাজে ফাঁকি দিতে শুরু করেছে। যে মরণ মিস্ত্রি আগে বেলা ডোবার পরও কাজ করতো। হাতের কাজ শেষ না করে বাড়ি ফিরত না। সেও আজ লাল আভা দেখার আগেই তার সরঞ্জাম গোছাতে শুরু করেছে। কাজে আসতেও বাজায় বেলা ১০টা। এরপর হাতুরি, করাত, বাটালে ধার দিতে কাটিয়ে দেয় কয়েক ঘণ্টা। কোনোমতে দিনটা পার করতে পারলেই তো পেয়ে যায় হাজিরার টাকা। এদিক দিয়ে মরণ মিস্ত্রি কিছুটা ভালো ছিল। কাজও করে ভালো। ফাঁকি দেয়ার অভ্যাসও আগে ছিল না। কিন্তু আজ তেমন কোনো কাজই করেনি। অথচ বেলা পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়তেই কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তাই বাড়ির কর্তা সুবোধ বাবুর রগটা সামাল দেওয়ার মতো ছিল না। হয়ত রাগের মাথায়ই দু’চার কথা বেশি বলেছে মরণকে।
মরণও কম রাগী মানুষ নয়। মৃত্যু যার সহোদর তার আবার ভয় কিসে? বাবা অনন্ত কির্ত্তনীয়া শখ করেই ছেলের নাম রেখেছিলেন শ্রী মরণ চন্দ্র কির্ত্তনীয়া। কিছু টাকা-পয়সার মালিক হলে না হয় নামটা তার তার যুৎসই হতো। গরিবের নাম কেটে ছেঁটে যা থাকে তা মরণই বেশি হয়ে যায়। তবে নামের যতটুকুই তার সঙ্গে থাকুক, সে যে নামের যোগ্য পুরুষ তা গ্রামের সবার জানা। ভূত-প্রেত তো দূরের কথা মৃত্যুকেও সে ভয় পায় না। ভয় তো শুধু এক জায়গায়। গরিব মানুষ! কাজ করে দিন চলে। কাজ আছে তো পেটে ভাত আছে। কাজ নেই পেটে ভাতও নেই। মালিকের সঙ্গে রাগ করলে কি আর সংসার চলবে? রাগের বহিঃপ্রকাশে যা করতে পারে তা হল- মালিক নিষেধ করার আগ পর্যন্ত কাজ করে যাওয়া। তাই রাগের বসেই আজ বেশি রাত করে কাজ শেষে বাড়ি ফিরছে মরণ। যদিও এখন তাকে একাই ফিরতে হবে। অত রাত অবধি এ গ্রামের কেউই এখন আর বাইরের বাইরে থাকে না। সবার মধ্যেই ভূত ভীতি কাজ করে। কয়েক দিন ধরে সোনাকুণ্ডু গ্রামে ভূতের ভয় জেঁকে বসেছে। বিশেষ করে কালীর ভিটার আশপাশে যতগুলো বাড়ি রয়েছে তাদের মধ্যে। কেউ কোথাও অস্পষ্ট কিছু দেখলেই ধরে নেয় নিশ্চিত ভূতের সাক্ষাৎ মিলেছে। আর তা আলোচনার রসালো খোরাক হয়ে ওঠে। নির্মলের চায়ের দোকান, বিষ্ণু দাসের হোমিওপ্যাথিকের দোকান থেকে শুরু করে গ্রামের যেখানেই দুটো মানুষের সন্ধান মেলে সেখানেই নিয়ম করে চলে ভূততত্ত্ব গবেষণা। প্রতিদিনই গ্রামের কেউ না কেউ সাক্ষাৎ ভূতের গল্প নিয়ে হাজির হয়। পাঁচ-ছয় বছরের বালক থেকে যুবক-বৃদ্ধ কেউই বাদ যায় না এ গল্প থেকে। যা কিছু দেখে সেই সঙ্গে মানানসই কিছু জুড়ে দিতে পারলেই জমে ওঠে গল্পের আসর। সেকথা গ্রামের এ মাথা থেকে ও মাথা পৌঁছাতেও সময় লাগে না তেমন। অবশ্য কেউ কেউ যে ঘটনা মিথ্যা বলে দাবি করে না তা নয়। আবার ঘটনার সঙ্গে তাল মেলাতেও পাওয়া যায় অনেককে।
কালীর ভিটার ভয়টা নতুন কিছু নয়। শত বছরের পুরনো এ কালীর ভিটায় এর আগেও অনেকেই অনেক কিছু দেখেছে। কিন্তু গত এক মাসে ভয়ের মাত্রা বেড়েছে অনেক গুণ। নারায়ণ ধোপা গলায় রশি নিয়ে মারা যাবার পর থেকে ভূত যেন লাগাম ছাড়া হয়ে গেছে। আগে তো কেবল কালীর ভিটাই ভূতের আস্তানা হিসেবে পরিচিত ছিল। এখন বাড়িতে বাড়িতে গিয়েও জ্বালাতে শুরু করেছে ভূত। রাতের আঁধারে অনেকের বাড়িতে গিয়ে কখনো স্পষ্ট কখনো অস্পষ্টভাবে নাম ধরে ডাকতে থাকে। একবার, দুইবার। এর বেশি আর ডাকে না। গত পরশুও অসিত কামারের বাড়িতে গিয়ে তার মৃত ছেলের সুর করে বাবা বলে ডেকেছে। এ কথা অসিত নিজ কানে স্পষ্টই শুনেছে। এর দু’দিন আগে গোপালদের বাড়িতে গিয়ে গোপালের সুর ধরে কেঁদেছে অনেকক্ষণ। গোপাল তো সিঙ্গাপুর গেছে সেই কয়েক বছর হলো। অথচ গোপালের সুর চিনতে একটুও কষ্ট হয়নি গোপালের বৃদ্ধ বাবা হরিদাস পালের। অবশেষে কোনো উত্তর, সাড়াশব্দ না পেয়ে হরির গোষ্ঠী উদ্ধার করে নেবে বলে হুমকি দিয়ে গেছে। দিনে দিনে ভূতের ভয় বেড়েই চলছে গ্রামবাসীর কাছে। তাই তো মরণের স্ত্রী মিতু কির্ত্তনীয়া বেলা থাকতে বাড়ি ফিরতে বলেছিল। স্ত্রীর কথা রাখতে গিয়ে আজ সুবোধ বাবুর বেশি কথা শুনতে হলো তাকে। মরণ ওসব ভূত-টুতে ভয় পায় না। একলা যেতে কষ্টও হবে না। কী আর করবে ভূত! কত রাতে গোপাল একলা ওই কালীর ভিটার উপর দিয়ে যাওয়া আসা করেছে। কোনো দিনই কিছু দেখেনি। আর সঙ্গে বিড়ি ম্যাচ থাকলে তো কথাই নেই। তাহলে মরণ একাই একেবারে বৃন্দাবন ঘুরে আসতে পারে। সেবার কালী মন্দির ভেঙে যাওয়ার পর গ্রামের কেউ যখন একটি ইটও ধরার সাহস করেনি তখন মরণ একাই পুরো নিয়ে গোয়াল ঘরের কাজে লাগিয়েছে। গ্রামের সবাই বলেছিল- এবার আর মরণের রক্ষা নেই। দেব-দেবী নিয়ে খেলা করার মজাটা এবার সে টের পাবে। মরণের যুক্তি হচ্ছে- ‘যে কালী দেবী নিজের মূর্তি ডোবানো থেকে রক্ষা করতে পারে না। নিজের থাকার জায়গা মন্দিরটাও ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে না; সেখানে ভাঙা মন্দিরের ইট ব্যবহারকারীকে কিই বা করবে? তাছাড়া মরণ তো আর নিজে মন্দির ভাঙেনি। একাই ভেঙে পড়েছে। ভেঙে যেহেতু পড়েছে কোনো না কোনো কাজে তো লাগাতে হবে ওগুলো। সুতরাং তার কিছু হবে না।’ হয়ওনি কিছু।
গ্রামের সবাইকে ভূতে গ্রাস করে ফেললেও মরণের কিছুই করতে পারবে না- এ সাহস মরণের আছে। কিন্তু তার স্ত্রী একথা মানতে নারাজ। মিতুর সাফ কথা- অত সাহস থাকা ভালো না। যদি কখনো একটা অঘটন ঘটে যায় তখন কী হবে? মিতুর জীবনেরই বা কী মূল্য থাকবে তখন? মরণ ছাড়া মিতুর জীবন একপ্রকার অর্থহীন। সে শঙ্কা থেকেই মিতুর চিন্তাটা একটু বেশি।
রাত প্রায় ১০টা বেজে গেছে। এত রাতে নির্মলের চায়ের দোকান খোলা নেই। রাতের বেলা চা খেয়ে বাড়িতে ফেরা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। একা একাই যেতে হবে এখন। একটু পরে গেলেও একাই যেতে হবে। তাই চায়ের তৃষ্ণা মিটিয়েই বাড়ি ফেরা যাক। প্রতিদিন কাজ শেষ করে নির্মলের দোকানে এক চা-আড্ডা না দিলে যেত রাতের ঘুমটা ঠিকমত হতে চায় না। পাড়াগাঁয়ের মানুষ, দিনভর কাজ করে। বিনোদনের নামে সন্ধ্যাবেলা ওই চায়ের দোকানে বসে একটু জমিয়ে গল্প করা। গ্রামের মানুষের চায়ের দোকানের এ মিলনটা বেশ ভালোই লাগে মরণের। সবার মধ্যে একটা আলাদা ভালোবাসা কাজ করে। প্রত্যকে প্রত্যকের সুখ দুঃখের খবর নেয়। সুখে দুঃখে একে অপরের পাশে দাঁড়ায়। কতই না আপন এ গ্রামের মানুষ। মরণ বিয়ে করার আগে বেশ কিছুদিন শহরে থেকে কাজ করে এসেছে। তাতে সে দেখেছে, শহরের মানুষ যতই আধুনিক হোক না কেন আন্তরিকতায় গ্রামের মানুষই এগিয়ে। শহরের মানুষ প্রয়োজনের মানুষকে ভালোবাসে আবার প্রয়োজনে খুনও করতে পারে। এককথায় প্রয়োজনমত মানুষকে ব্যবহার করে। এখন যাকে ভালোবাসার কথা শোনায় খানিক বাদেই তাকে গালি দিতে দ্বিধাবোধ করে না। প্রয়োজনে শত্রুকেও কাছে টেনে নেয়। আবার আপনজনকেও দূরে সরিয়ে দেয়। কঠিন ইট-পাথরের তৈরি দালান কোঠায় থাকতে থাকতে তাদের মনটাও ইট-পাথরের মতো শক্ত হয়ে গেছে। মানুষের চোখের জলও তাদের হৃদয় স্পর্শ করতে পারে না। মৃত্যু সংবাদেও দাঁত কেলিয়ে হাসতে জানে। আর গ্রামের মানুষ ক্ষেত খামারে কাজ করে। নরম মাটির সঙ্গে তাদের বাস। তাদের দিলটাও কাদা-মাটির মতো নরম। তাই তো মরণ বিয়ের পর আর শহরে যায়নি। গ্রামে থেকে আশপাশের গ্রামগুলোতে কাজ করে যা উপার্জন করে তা দিয়ে ঠিক সংসার চলে যায়। প্রতিনিয়ত গ্রামের মানুষের সঙ্গে দেখা হয়, কথা হয়, মনটা ভালো থাকে। আজ আর নির্মলের দোকানের আড্ডাটা হলো না। কিন্তু চা না খেলে যে চলবে না! তাই তো চায়ের নেশায় সে বাড়ির দিকে না গিয়ে পথ বেঁকে চলে যায় রামের বাজারের দিকে। রামের বাজারের ঠিক পশ্চিমে দু’গ্রাম পরেই সোনাকুণ্ডু গ্রাম। দ্রুত পায়ে হেঁটে গেলে ৩০-৩৫ মিনিট সময় লাগবে মরণের। চা খেয়ে বেশি দেরি করবে না। ঠিক ১১টার মধ্যে বাড়ি পৌঁছে যেতে পারবে।
চায়ের তৃষ্ণাটা কোনোমতে মিটিয়ে দ্রুতপায়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় মরণ মিস্ত্রি। মিতু খুব দুশ্চিন্তা করছে ভেবে অন্যদিনের তুলনায় আজ হাঁটার গতিটা বাড়িয়ে দেয় সে। ১১টা বাজতে কিছু সময় বাকি থাকতেই পৌঁছে যায় কালীর ভিটায়। কালীর ভিটায় পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই ঘটে যায় অবাক করা কাণ্ড। যা ইতিপূর্বে কখনো ঘটেনি। ঘটবে বলে কখনো চিন্তাও করেনি মরণ মিস্ত্রি। কালী মন্দিরের সামনে আসতেই শুনতে পায় কে যেন ফিসফিসিয়ে কথা বলছে। এত রাতে তো কারো বাইওে থাকার কথা না। তার উপরে কালীর ভিটায়! তাহলে কি আজ সে ভূতের খপ্পরে পড়েছে? একটু খেয়াল করে দেখে, শব্দটা কালী মন্দিরের দক্ষিণ পাশে বুনোগাছে লতাপাতা জড়ানো ছোট্ট জঙ্গল থেকেই আসছে। হঠাৎ মরণের আগমনে তা থেমে যায়। মরণের কম্পিত হৃদয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কেঁপে ওঠে গোটা পৃথিবী। রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে সেই সঙ্গে নড়তে থাকে ছোট্ট জঙ্গলটাও। মরণের পা আর সামনে এগোতে চায় না। শরীরের ওজন বেড়ে গেছে অনেকগুণ। আজ যেন মরণের শরীর কাঁধে তুলতে অস্বীকার করছে তার পা। অবশ হয়ে আসে সমস্ত শরীর। কী করবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না। মনের মধ্যে একটু সাহস জুগিয়ে হালকা অন্ধকারে সে লক্ষ্য করে দেখতে পায় একটা বস্ত্রহীন ভূত মানবী গুটি-সুটি দিয়ে বসে আছে। আজ যে কেন এত অঘটন ঘটছে মরণ তা ভেবে পায় না। ভয়ে ভয়ে উচ্চারণ করতে থাকে দেব-দেবতাদের নাম। সে যেন ৩৩ কোটি দেবতার নাম মুখস্ত বলার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। বিপদে রক্ষাকারী দেবতা লোকনাথ, বিপদ নাশিনী দেবী দূর্গা থেকে শুরু করে যত দূও মনে পড়ে কেউই আজ মরণের উচ্চারণের বাইরে যেতে পারে না। অবশেষে যখন কোনো দেবতার দোহাই-ই মানছে না ভূত মানবী তখন কী আর করা! এনে পড়ে যায় গ্রামের কথিত প্রথা ‘বিড়ির আগুনের সামনে কোনো ভূত-প্রেতই টিকতে পারে না। কিছু করতেও পারে না।’ কম্পিত হাতে একটা বিড়ি জ্বালাতে উদ্যত হয়। বিড়ি জ্বালিয়ে আবারও লক্ষ্য করে দেখে একটা ভূত মানব দণ্ডায়মান এবং গুটি-সুটি মেরে বসে থাকা ভূত মানবীটি অগোছালো শাড়ি গায়ে জড়াতে জড়াতে অতি সাবধনে ধীর পায়ে পূব দিকের পুকুর পাড় ধরে নেমে যাচ্ছে। দূর থেকে যতটুকু আঁচ করতে পারে- দাঁড়িয়ে থাকা মানব যে মরণর পরিচিত। পাশের বাড়ির কমলেশ দা’র শহরে থেকে পড়–য়া ছেলে রবিন। এবার ভূত ভীতিকে উপেক্ষা করে আরও স্পষ্ট হওযার জন্য এগিয়ে যায় মরণ। চিনে নেয় ভূত মানবীকেও। কিন্তু এ কি? মানবীটিকে দেখার পর আর সামনের দিকে পা চলে না মরণের। ভূত ভীতি চলে গেলেও অজানা ভয় তাকে চেপে ধরে। আর সামনে আগাতে পারে না। ভয় না লজ্জা? হয় তো এ প্রশ্নের উত্তর মরণেরই জানা নেই। সারা শরীর শিথিল হয়ে আসে তার। যা কখনো কল্পনাও করতে পারেনি মরণ। নিজের চোখকেই আজ তার বিশ্বাস হচ্ছে না। অবশেষে কোনো কিছু না বলেই সেখান থেকে বাড়ি ফিরে যায় সে।
সে’দিন রাতে কোনোভাবেই মরণের চোখের পাতা দু’টিকে জয় করতে পারেনি ঘুম। বারবার ঘুরে-ফিরে ঘুওে ফিরে ওই একই তাড়া করে তাকে। মিতুকে বলবে বলবে করেও বলতে পারছে না। কি-ই বা বলার আছে? এত রাতে ওই মানব-মানবী কি করছিল ওই ভূতের রাজ্য কালীর ভিটায়? ভূতের ভয়ে যখন গ্রামের কেউ-ই বাড়ির বাইরে থাকার সাহস দেখায় না তখন কেবল মরণই বাইরে ছিল ক্ষুধার জ্বালা মেটানোর জন্য। আর ছিল তারা দু’জন। তাদের তো ক্ষুধার কষ্ট নেই। সংসারে কোনো অভাব আছে বলেও জানা নেই মরণের। তবে কী এমন জ্বালা মেটানোর জন্য তারা এ ভূতের রাজ্য জয়ে উদ্যত হলো? এ জগতে ক্ষুধার জ্বালার চেয়েও বড় কোনো জ্বালা আছে কি? থাকলে কী সে জ্বালা? কথাগুলো ভাবতে ভাবতে যখন ঘুমের সঙ্গে এক্কা-দোক্কা খেলছিল মরণ মিস্ত্রি তখনই আসে গোপালের বিদেশ থেকে বাড়িতে আসার সংবাদ। গতরাতে গোপাল সিঙ্গাপুর থেকে বাড়িতে এসেছে। এ খবরের সঙ্গে আরো একটি খবর দেয় মিতু- গতরাত থেকেই কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না গোপালের স্ত্রীকে, আরো পাওয়া যাচ্ছে না কমলেশ দা’র শহুড়ে পড়ুয়া ছেলে রবিনকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *