বতক-এর গল্প বলার ঢং ছিল খুবই সহজ এবং সাবলীল।। সাকিব শাহরিয়ার
উপন্যাস: বতক লেখক : ইকবাল খন্দকার প্রকাশক: অনন্যা মূল্য : ২৭৫ টাকা শততম উপন্যাস অনেক লেখকের জন্যই একটা স্বপ্নের ব্যাপার। বলা মুশকিল, ঠিক কতজন লেখকের পক্ষে শততম উপন্যাস লেখা সম্ভব হয়েছে। তবে লেখক ইকবাল খন্দকার তাঁর “বতক” উপন্যাসের মাধ্যমে শততম উন্যাস লেখার গৌরব অর্জন করেছেন। বতক শব্দের অর্থ মাদী হাঁস। যা এই উপন্যাসের নামটা দেখার আগে অনেকেরই হয়ত জানা নেই। যাইহোক, একটা বতককে কেন্দ্র করে টানটান উত্তেজনার মধ্যে কাহিনী এগিয়েছে পরিনতির দিকে। গল্প বলার ঢং ছিল খুবই সহজ এবং সাবলীল। টান টান উত্তেজনা ছিল প্রতিটি অঙ্কে। কখনো গল্প পড়ে যায় নি। একটা মুহূর্তে জন্যেও বোরিং বা স্লো মনে হয় নি। কোন ব্যক্তিক চরিত্রকে আবেগের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে গল্প লেখা যেকোনো লেখকের জন্য তুলনামূলক সহজ কাজ। কিন্তু গল্পের মূল চরিত্র যখন নৈব্যক্তিক হয় এবং তাকে ব্যক্তিরূপে উপস্থাপন করতে হয় ঠিক তখনই শুরু হয় একজন লেখকের পরিপক্কতার পরীক্ষা। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের “মহেশ” নামক ছোটগল্পটি ছিল এর এক সার্থক উপস্থাপনা। কারন পুরো গল্পটার কেন্দ্রীয় চরিত্রে ছিল একটা “গরু” এবং উক্ত চরিত্রটার মধ্যে ফুটে উঠেছিল তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থার এক বাস্তব চালচিত্র। লেখক ইকবাল খন্দকারের “বতক” উপন্যাসটি অনেকটা এই ঘরনার হলেও পুরো গল্পটাতেই বতকটা ছিল নীরবে, নিভৃতে। পাঠক তাকে আবিস্কার করবে উপন্যাসের শেষ প্রান্তে আর তখন বুঝতে পারবে বতকটা এই উপন্যাসের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ছিল অথচ সে টেরই পায়নি। এখানেই ছিল লেখকের সবচেয়ে বড় মুন্সিয়ানা। লেখকের ভাষ্যমতে, “বতক” বড়দের বই বলা হলেও মূলত বড়দের বই বলতে সমাজে তা বুঝায় তেমন কোন কন্টেন্ট (অ্যাডাল্ট) বতকে পাওয়া যায় নি। উপন্যাসটির তেমন কোন দুর্বল দিকও চোখে পড়েনি এবং আশা করি উপন্যাসটি পাঠকের ভালো লাগবে।