কবিতা

গুচ্ছ কবিতা সৈয়দ রনো

ভাবের পদাবলী

কি আর হবে ঢাঁক বাঁজিয়ে
সকাল সন্ধ্যা শাখ বাঁজিয়ে
ঘোমটা পরা বৌ সাজিয়ে
সাদা মুখে রঙ মাখিয়ে
কেউ সুখে নেই কেউ
খ্যাঁমটা নাচের গান শুনিয়ে
নকশী কাথায় ফুল বুনিয়ে
বলছি কথা গুনগুনিয়ে
লাগছে পিচে ফেউ
কেউ সুখে নেই কেউ।

মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে
পরপুরুষের হাতটি ধরে
খেলার ছলে আছড়ে পরে
মন ভালো নেই আর
জোড়াতালির বোঝা বয়ে
দুঃখ ব্যাথা নিজেই সয়ে
না পালিয়ে মৃত্যু ভয়ে
হেল্প করেছি যার
মন ভালো নেই তার।

গোমরা মুখে ফুটবে হাঁসি
ছাগল বাজায় কালার বাঁশি
চাঁন্দু মিয়া লাফায়
বুদ্ধিমানে পালিয়ে বেড়ায়
ইঁদুর ঢুকে শূন্য ডেরায়
দেশ চলেছে মিথ্যে চাপায়
তাইতো এবার গবরধনে
দেশটা শুধু কাঁপায়
মা বলেছেন খঁবিশ ওরা
মারনা লাথি চাপায়।

ধ্বংস

দক্ষিণ হাওয়ার কুলিন বনে উড়ছে কথা
মনের সাথে মন মিশিয়ে শুনছি তথা
পিয়ান নদীর আবেগ ভরা গর্ভপাতে
জন্মনেয়া পাহাড় নদী কাঁদছে রাতে
কান্না শুনে বলছি সেদিন আর কেঁদো না
মারতে হবে মরতে হবে আর ভেবো না
নওজোয়ানের উন্মাদনা লাগুক পালে
ধ্বংস হবে শোষক জাতি করুন হালে।

মৃত্যুনেশার বায়না ধরে হায়েনা যতো
হায়দারীহাক ছড়িয়ে দিয়ে পিষবো ততো
ধর্ষিত হয় বাংলাদেশের বুকের মাটি
শপথ নিলাম বদলানেব বলছি খাঁটি
মিথ্যেবাদীর জিহ্বা টেনে ছিড়বো না হয়
মরতে হবে সত্য জানি আমার কি ভয়
মিথ্যেবাদী খাবেই ধরা রাত্রী শেষে
আমজনতা মরতে জানে বীরের বেশে।

কবিতার ডাইরি

কবিতার পরিত্যাক্ত ডাইরি এখন
খানা খন্দরে আটকে পড়া
মাকড়সার বিস্তৃত জালে আবদ্ধ
প্রতিদিন ঈদুর আর তেলাপোকার ভজন বিলাসের
ফাক গলিয়ে খেলা করে
আকাশের কার্নিশে ঝুলে থাকা জোছনার হাসি
রাতের মিশকালো অন্ধকারে
গোল্লাছোট খেলে আমার বয়স্কঅনুরাগ

মুখ পোড়া কিছু মিথ্যেবাদীর চক্রান্তে
নাস্তানাবুদ আমার কবিতার শরীর
এইতো সেদিন
যৌবনের পারম্ভে
উত্তাল নদীর উল্টো স্রোতে ভাসিয়েছিলাম
কবিতার নাও
জীবনের সব দুংখবোধ যখন একত্রিত হয়ে
আমার মাথার মগজে পারমানবিক বোমার
গতিতে করেছিলো আঘাঁত
ঠিক তখন তর তর করে বয়ে চলা
খড়স্রোতা নদীর উজানী ঢেউ
আর ভাটির ডাকাত শুনিয়েছে রুপকথার গল্প

হাসি আর কান্নার বেদিতে
তিলে তিলে ফোঁটিয়েছিলাম জীবনবোধের ফুল
তা শুকিয়ে ঝড়ে গেছে কবে
মরা পাতার পালকে এখন
আমার যত সমান্য বসবাস
কবিতার যৌবিক যন্ত্রনায়
মধ্যরাতে ঘুম ভেঙ্গে শুয়ে থাকি একা
হাতের নাগালের বাইরে কে যেনো
বুনে যায় কাব্যবাগানের নতুন ফুটন্ত কলি
ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে ফ্যাকাশে মলিন

মধ্য বয়সেও হাতের নাগালেই ছিলো
চাঁদ সূরুজের আলোকিত রাত
চোখের পাপড়ির ফাঁকে খেলা করে
হিরন্ময় দিন
নিজের ভুলেই ক্লান্তির সূর্যস্নানে ডুবেগেছে
বেহিসেবি আবেগের সফেদ ফেনা
চোখের সামনে অমানবিক নরক যন্ত্রনায় ক্ষয়ে যায়
কবিতার রুপ লাবন্য ঘেরা মসৃন শরীর।

কষ্টশপথ

রাত আসে কুঁজো হয়ে লজ্জায় কালো
বেদনার কাঠিন্যে জ্বলে সামান্য আলো
দিন হাসে চোখ খুলে আহা কতো সুখ
আঁধার সরাতে ফাটে অভাগার বুক
কালোর কপালে টিপ পূর্ণিমা হাসে
কষ্টের পাল তুলে সুখ ভেসে আসে
ভোগের এ্যাকোস্টিকে তাল কাটা সুর
বিলাসী জীবন ছিড়ে তারার নূপুর।

কষ্টশপথে ফোঁটে জোছনার ফুল
কর্মে কুলীন জানে ব্যার্থতা ভুল
নিজের ভুলের মাশুল দিতে হয় রোজ
কাঙ্গাল কর্মে সফল তারুণ্যে মোজ
নিজের ভেতরে পুষি সূর্যের জ্বালা
সাধনে ভোজন মিলে কাঙ্ক্ষিত মালা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *