খান মুহাম্মদ রুমেল-এর কবিতা
কবিতা— ধার করা সুখ, পেন্সিলে লেখা, দূরত্বই নৈকট্য, ফেরেববাজ শহর
ধার করা সুখ
ধার করে আনা সুখে বেঁচে ছিলাম-
সুদ আসলে ফেরত চাইলে যেদিন
আবিষ্কার করলাম নিজেকে পুরোই দেউলিয়া!
এখন দাসত্ব মেনে নেয়া ছাড়া উপায় কি?
আমাকে কি শাস্তি দেবে দাও।
দূরত্বের নির্বাসন দিয়ো না প্লিজ!
আমাকে বরং তোমার আঁচলে বেঁধে নাও
যখন ইচ্ছে খরচ করো ভাংতি পয়সার মতো!
অথবা নাকফুল করে নিতে পারো আমায়!
চোখের সামনেই থাকলাম সব সময়!
দেনা শোধের সুযোগ যদি হয় কখনো?
পেন্সিলে লেখা
মুছে যাবো একদিন পেন্সিলের কালি
রাখবে কি মনে- অনামী কবি
ছিলাম তোমাদের সময়ে?
অতন্দ্র গেছে কতো কতো রজনী
অপেক্ষায় থেকেছি সুতীক্ষ্ণ ঈগল
মোহন ছন্দের খোঁজে!
ভোর আলোয় ধরা দিয়েছে কখনো
কবিতারা শিউলির সজীবতায়
কখনো রেখেছে ফিরেয়ে মুখ রুক্ষতায়।
তবুতো আমি লড়েছি- হেঁটেছি পথ ছন্দের খোঁজে!
বলবে একদিন আগামীর কেউ-
রাঙাতে পেরেছি কি পারি নাই!
দূরত্বই নৈকট্য
তারপর দেখা হয়ে যায় হঠাৎ একদিন
নেমে আসে রাজ্যের ঘুম ক্লান্তিহীন!
মায়ের পেটের মতো উষ্ণ বিছানায় গলে গিয়ে
ঘুম ঘুম চোখে দেখি মুখখানি তোমার !
অথচ,
তখনো কতো কাজ বাকি আমার
নিদ্রা বিলাসের সময় কই!
আমি তো চেয়েছিলাম নিদারুণ বন্দিত্ব
অথবা,
আজীবনের নির্বাসন তোমার চোখের কোণে!
দুজনের কেউ জানলামই না- নজরবন্দির ব্যথা নয়,
অপার নৈকট্যের দূরত্বই আমাদের নিয়তি!
ফেরেববাজ শহর
এই শহরটা না প্রেমের না দ্রোহের
এই শহরটা অপ্রেমের, দালালির!
নিয়ন আলোয় এই শহরে বিকিয়ে যায় ন্যায্যতা
ফেরেববাজের গলায় ঝুলে জয়ের মোহর
অযাচিত উচ্চকণ্ঠের দাম বড়চড়া।
মেনে নাও মিলে যাও ভুলে যাও-
অধিকারের কথা!
লেখা আছে অনেক কিছুই- আছে বলাও-
সবই আছে কেতাবজূড়ে পাতার পর পাতা!
সবই শুধু কথার কথা- বহে, না মানার ব্যথা!
অযোগ্যের অভিমান মূল্য পায়- সয়াবিনের দামে!
অপ্রেমের শহরে তবু প্রেম খুঁজি- কবিতা তোমার নামে!