কবিতা

খালেদ রাহীর গুচ্ছ কবিতা

দুঃসময়

এ পাড়ায় মরা শকুনের উল্লাস

কেমন গা জ্বালা করে । বাঘের

শিকার ধরা কাল ঘিরে ধর কষাকষি

একবার ও যেতে পারিনি বাঘবিদ্যালয়ে

কেবলি খুচরো পয়সা গুনতে গুনতে

নীলুর কাছে পাঠ নিয়েছি – টাকায় বাঘের দুধ মিলে ..

শুনেছি নীলুদের পাড়ায় ঢুকে পড়েছে

চতুর বাঘ । আমাকে তাড়িয়ে নিচ্ছে

অভাবের কাল । মরা শকুনের ভান

ধরে ঢুকে পড়লে গণিকা পাড়ায়

লেজকাটা শিয়ালের খবরদারি

‘‘কবি কুকুর বানান কর দেখি ‘’

কেমন ঘেন্না ঘেন্না লাগে জীবন !!

পা

সব সুন্দরীর পা সুন্দর হয় না

হয়তো মুখও না; তবু পা আমাকে টেনে নেয়

রাত্রির আশ্চর্য রোদের তলপেটে।

পা ছুঁয়েতো প্রতিটি পুরুষ রোদের পাঠ নেয়

নারীর খাঁজকাটা বুকে।

ঘুম শহরে পায়ের প্রদর্শনী

পা দোলায় কে? নারী নাকি পরী

শৈশবে নীলুকে চিনতাম; রাত্রি এলে

ভাবতাম পায়ে পায়ে পা ফেলে ডেকে আনবে

বংশের প্রদীপ।

আহ! নীলু তোর পা কেবলই আমাকে ভিখারী

বানিয়ে রাখে ঘুমের শহরে।

ঈশ্বর

এক ফুঁয়ে ঈশ্বরকে সাকার করে দিয়ে

তাকিয়ে থাকি… ঈশ্বর হেঁটে যাচ্ছে অপরাধী

হারুত মারুতের মতো ; কুমারীর কোমরভাঙা

নদীর বাঁকে ।

ফুটপাতে তাড়িখোর লাগাচ্ছে তাড়িগাছ

লেজ নাচাতে নাচাতে কুকুরেরা পাড়ি দিচ্ছে

ঘুমহীন রাত্রি।

কানাগলিতে ঈশ্বরের সাথে দেখা হলে

কুমারী বিস্ময়ে তাকায় … ঈশ্বর বললেন,

‘তোকে ক্ষমা করে দিলাম’

নদীর ঠোঁটে লিখে রাখি নিরাকার জীবনই পূত-পবিত্র ।

জখম

রক্তজবা ভোরে হলুদ পাতার মতো জখম বসে থাকে

জখম তুমি কি করো?

ভোর সিড়ি ভাঙছে সময়ের

পুকুরে সাঁতার কাটছে রাঁজহাসের ডানা

সুখি ভোরে

জখম তুমি বসে আছো কেন?

অন্ধকার

নেমে এলে একটানা অন্ধকার

আমি ঈশ্বরের কাছে যাবোনা

শয়তানের কাছে ও না

ঈশ্বর আদম হাওয়ার গল্প শোনাবে

শয়তান ক্ষমতা দেখাবে

আমি কানাগলির মেয়েটির কাছে যাবো

যে আমাকে দেবে মানবতা পাঠ

মেয়ে আমাকে পাঠ করবে ?

আমি দাড়ি নয়

কমা নয়

কেবলি বিচ্ছেদ চিহ্ন !

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *