কবিতা।। বঙ্গ রাখাল।। কাব্যশীলন কবিতা উৎসব সংখ্যা
যুদ্ধবিরত : আড়মোড়া ভাঙা মিড়মিড়ে কবিতা
১.
মিথ্যা চোখে আতর মেখে-আমি হাসির ছলে ভাবতাম-
নিজেদের তালপাতার বাঁশি থাকবে।
নীল পাতার খামের মধ্যে লালদোয়ারী কষ্টে ভেজাশরীর থাকবে।
মিথ্যামামার হালুম থাকবে আর থাকবে পাথরচাচার নখের কোণে
গোপন কিছু উড়ে আসা দাদুর হাতের মিড়মিড়ানির তীব্র মাছের অসুখ ।
নগ্ন ব্লেডে যেদিন তুমি-চিঠির লম্বা ঠোঁটে, বাকরুদ্ধ বাউলের চুল
রাখলে-সেদিনই দরকষাকষি করে মরে গেল নীরব নিথর
কলজেপরানী যুদ্ধবিরত আড্ডাবাজ আমি…
২.
একটা কথা ভেঙে বলি- কিছুদিন হলো খেজুরের রসে নোংরা
ইঁদুর রেখে বেচে এলাম নিজের শরীর-হয়তো ধরেই নিলেন
ভাড়াখাটি আমি-আসলেই কিন্তু আমরা ভাড়া খাটি আবার
নিজের গর্ভে জন্মায়ও সন্ধ্যা রাতের ঝিকিমিকি চাঁদ।
গোপনে বললাম মাইন্ড করেননি তো গুণী জনেরা-
আপনারা তো পাড়ায়-টাড়ায় যান না বা যাওয়ার অভ্যাস ও
তো নেই কোন কালে। বকিয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে চান নিজের
নিম্ন মানসিকতার উচ্চতররুপ। কি করব বলুন-ভাড়াখাটি
তো তাই…ছোট-বড়কে একই মনে হয়।
৩.
রবীন্দ্রনাথ একবার শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন-মাসিকে ডেকে
বললেন-মাসি গরম জল হবে। মাসিতো রেগেমেগে বললেন-না।
ঠাকুর তখন-নাটকের উত্তেজক এপিসোড রেখার কাজে ব্যস্ত।
এই শান বাঁধা ঘরেই রবীদা-গরম জলের পরিবর্তে মৃণালী দেবীর
মাথাব্যথায় একাকি টিপলেন নিজের পাইথন…
রবির একটা মূর্তি রেখেছি নিজের হৃদয় খোড়লে-ভাবছি
ভেঙে ফেলব। কেননা যদি অধার্মিক হই… নিজের কৈফিয়ত
নিজের কাছে রেখে ছুটে চলি দূর হতে বহু দূরে…
৪.
বিপন্ন রাজনীতি একদিন হেঁটে যাচ্ছে ফুটপথ ধরে…
সাথে সেয়ানা সেয়ানা স্তনফোলা বালিকা ললনা-ওদের
কোমরের কাছে শতাব্দীর ধারালো চাকু
আর ব্যস্ত নগরে অতৃপ্ত হুইস্কির খামার…
৫.
আমার সুবর্ণ মেকাপের মধ্যে লুকানো আছে জলন্ত
কবুতরের ছোট ছোট স্কুল রুম। মিন্টুরোড, ইস্কাটন
আর শাহবাগের কোণ ঘেঁষে আমার হেঁটে চলা বেহিসেবী
জীবনের একরতি কষ্ট-লোকজন আমাকে শুধু শুধু
গালপাড়ে-কেউ কেউ বাহাদুর ভাবে-আমি আসলে
ঝিনাইদহের ছেলে। বিশাল পৃথিবীর এককোণে ঝুলে থাকে
ঝিনাইদহ-মুখের উপরে বলতে পারি না-দেখেন পক্ষে-বিপক্ষের
কেউ আমাকে টিয়ার গ্যাস বা বোমা মেরে মায়ের কোল খালি
করবেন না। চুল রেখে প্রতিষ্ঠারোধিতার কথা ভাবি না
জনাব-মেজাজটা আজ খারাপ তাই কাউকে কুত্তা-মাগীর ছা
বলতেও ছাড়ি না। জানেন তো বাবু সাহেব-এদের নাড়বেন
না-এরা স্বঘোষিত একেকজন মহারাজা।