কবিতা

নাহিদ মিশুক এর কবিতা

এখানে তুমি ক্ষমতাহীন

এতোক্ষনে বুঝলাম অংক মেলার চেয়ে তুমি মেলা কঠিন,
অপেক্ষায় প্রতীক্ষায় তিতিক্ষায় ভয়ঙ্কর সব

পাটিগণিত-বীজগণিত হ্যান্ডশেক করে এলো-গেলো,
অথচ,আশায়-ভাষায়-নেশায় আমি বসেই রইলাম!
চাঁদ ডুবে আমাবস্যা আবার মচমচে জোছনা ডুবিয়ে মেঘ-কুয়াশা।
ভুলে যাবার,দূরে যাবার,মুছে যাবার প্রস্তাবনায়-
মোহ নয়,প্রেম নয়;ভালোবাসার সাক্ষর করেছিলাম।
তাই-
ভুলে যেতে যেতে ভালোবাসি
ভুলে যেয়ে ভালোবাসি।
দূরে যেতে যেতে ভালোবাসি
দূরে যেয়ে ভালোবাসি।
মুছে যেতে যেতে ভালোবাসি
মুছে যেয়ে ভালোবাসি।

চিরকুট

উত্তর না মেলা প্রশ্নটা বাতাসে ঘ্রাণ মেশায়
ঘরে ফেরার প্রতীক্ষা করে কপাট দুখানা।
ফিরবো ফিরবো বলে যাত্রা দিয়েছি অনন্তে
আজ-কাল কোরে-
-আজকাল ভুল ছাড়া কিছু করি না।

স্থান ত্যাগে স্থীর মন নড়েচড়ে শ্বাস নেয়;
শীত শেষে শীতের পাখিও ফেরে ঠিকানায়।
আমিও ফিরবো ভাবছি-
তুমিও ফিরিয়ে দিয়েছিলে।
মন খারাপের ইজারাদার,
জানো?
-ফিরে যাওয়াদের পিছুটান থাকে।

কবি’তার মৃত্যু হোক

কবিতা না গেঁথেই বরঞ্চ মরে যেও কবি-
কল্পনার নদী পেরিয়ে এখানেই তো আসবে।
কেন মিছেমিছি মায়া উৎপাদন?
অশ্রু চোখে সূর্য ওঠেনা,
স্বস্তা সব মানুষই;যাকে চাই সে ছাড়া।
চাঁদ লজ্জায় বিলোয় অনুজ্জ্বল আলো-
তোমার সাথে তুলনা দেয়নি বলে হীনমন তার?

জাতিসংঘে উত্তাপ-
সাধারণ পরিষদে হুমকি চলছে,
উপাসনালয়ে বেজে ওঠে করুণ ওপেরা।
এই দশমীতে প্রার্থনা হবে; সীমানা নয়, প্রাচীর নয়, রক্ত নয়,

কাঁটাতার নয়, আক্রোশ নয়-কেবল পথের পাশে শুয়ে থাকা

ক্লান্ত ভিখিরির ঘুম।
রোদ ঠেলে আসবে ছায়াবীথি-
কবি ও কবিতার পোস্টারে ছেয়ে গেছে নারীর হৃদয়,
কি লিখবে কবি?

শতবর্ষী জীবনীতে থাকবে সফলতার গল্প,
যদিও, অর্ধাঙ্গীনী মগজ থেকে বুকে এলোনা;
নিরর্থক কবিতা।
এখনো বাঁচতে চাও কবি?

আন্তঃনগর এক্সপ্রেস

সহসা ছেড়েছে ট্রেন-
ছেড়ে যাচ্ছে শহর থেকে শহরতলী
পরে থাকছে শত শত গল্প,
ঘরবাড়ি,উঠে যাওয়া পিচের রাস্তা,রিক্সায় পাশের সিট’টা।
স্মৃতিগুচ্ছ বয়ে নিচ্ছে শুধু আন্তঃনগর এক্সপ্রেস-
মৃত লাশ নিথর এগিয়ে যাচ্ছে সাড়ে তিন হাত আস্তানায়
হাত বাড়িয়ে হাওয়া ধরছে অনুর্ধ দশেরা,
ছয় ইঞ্চির পৃথিবীতে ডুবে গেছে আধুনিক মানুষ;
শিশুতোষ জীবনের ছবিতে ফিরে তাকায়-ষাটোর্ধ প্রৌঢ়।
পাথরের নিরব সমর্থনে
কথা বলছে ট্রেন প্ল্যাটফর্মের সাথে।
নিরব চলছি যেন পালাচ্ছি-
কেউ তাড়াচ্ছে না তো?
জানিনা!

তুমি দিনের আলোর মতো উজ্জ্বল এবং বিভ্রান্তিকর-
আমি আমাবস্যার মতো স্পষ্ট।
এলোমেলো জীবন দিয়েছে অগোছালো কষ্ট
পরিপাটি সব কিছুরই অবদান তোমার।
গন্তব্যে পৌঁছবে সব যাত্রী
পথের দুঃখে কেউ দায়িত্ব নিয়ে দেয়না সান্তনা।
এ এক আজব চুক্তি-অক্লান্ত ছুটছে যন্ত্র;
সবুজ থেকে ধূষর-ধুসর থেকে নীলে
প্রবাহিত হচ্ছে আমার নির্দয় যন্ত্রণা।

২ thoughts on “নাহিদ মিশুক এর কবিতা

  • রুবেল হোসেন

    অসাধারণ

    Reply
  • Rakibul islam

    আসাধারন বটে!😍😍😍

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *