শারমিন সুলতানা রীনা এর কবিতা
গল্প কথা
রাতের শরীর জুড়ে নেমে আসা
তিমির অন্ধকারের মতো
যেমন কোন সত্য নেই
এ সত্যের মতোই কোন কোন গল্প কথারাও
হারিয়ে যায় কালের গর্ভে।
স্বেচ্ছায় বেছে নেয় মৃত্যুর সূরা পান করে
আত্মহুতির পথ।
মহাকাল বড় অদ্ভুত বিচারক তুমি
কী অবলীলায় ঝেড়ে ফেলো সমস্ত দায়বদ্ধতা।
যখন হৃদয় তার দুলে ওঠে পালতোলা নায়ের মতো
দু’চোখে স্বপ্ন ছিটিয়ে কেউ একজন
বিষ মাখা ঠোঁটে চুম্বনের নামে দিয়ে যায় ছোবল।
ঘোলা জলে ভাসে আকাঙ্খার লাশ।
লাশের শরীর নিয়ে গল্পরা বাঁচার আশায়
ফিরে আসে মর্ত্যে বিষের নহর বয়ে।
তরুণ বেদে শুধু একবার মন্ত্র দিয়ে তুলে নাও
রক্তনালী থেকে নীল বর্ণের জাত সাপের বিষ।
উল্কাপাত
তোমাকে ছুঁয়ে যেতে
ইচ্ছেদের যখন খুব বেশী বাড়াবাড়ি
আমার জোটেনা তখন কিছুই।
বসন্তের রক্তিম আভায়
তোমার নির্জনতায় খুঁজি আশ্রয়
তুমি তখন উত্তরী বাতাসে উড়িয়ে দাও।
একটু মানবিক প্রেম ও পরশের কাছে
কতটা তৃষ্ণার্ত হলে কেউ
গড়ে তোলে শূন্যেই ঘর সংসার।
সেই কবে হারিয়েছি ভাষা,
হারিয়েছি কারুকাজ।
মাটির শরীর তবু মাটির কাছেই
পেতে চায় আজন্ম লালিত সাধ।
আকাশ কি রাখে মনে?
অঙ্গন থেকে কখন ঘটে
কোন উল্কাপাত?
অনাকাঙ্খিত জল
অকূল দরিয়া হৃদয়ে বয়ে
তবু তৃষ্ণায় পুড়ি।
সৌরভের তীরে বিদ্ধ হয়ে
পরিযায়ী মেঘে উড়ি।
যক্ষের ধনের মতো লুকানো স্বপ্ন
এতো যে বেদনাময়
পূর্ণিমা দেখেছো চাঁদের গায়ে
দেখোনি চাঁদের ক্ষয়।
বিষের জ্বালায় নীল হয়ে যাই
জীবনের কীর্তনখোলায়
লক্ষিন্দরের মতো বাসনা ভাসে
অনাকাঙ্খিত জলের ঘোলায়।
জীবন এতো ছোট
নেতাইয়ের মতো আমারও বুকের ভিতর
হু হু করে উঠে
এক অন্ধকার শূন্যতা নিয়ে নির্বাক
দৃষ্টি মেলি জোসনাহীন আকাশে।
আহা জীবন এতো ছোট ক্যান?
এই জন্ম, এই জন্ম আমার একটি স্নিগ্ধ সকাল
রোদ্রের প্রখরতায় চৌচির হয়ে
অন্ধকারের প্রান্তর ছোঁয়া এক গোলক ধাঁ ধাঁ।
শক্তি ও ক্লান্তি হাত ধরে হাঁটে
আশা-নিরাশা যেন পরম বন্ধু।
অনন্ত ফেরারী হয়ে
মহাকালের আলপথ বেয়ে খু্ঁজি
রহস্যময় জন্মের ইতিকথা।
আহা! জীবন এ্যতো ছোট কেন?
প্রতিদিন হালখাতা পূর্ণ হয় সংখ্যায়
তবু যোগের হিসেব থাকে শূন্য
বোধের ঘরে ঢোকে ঘোর
ডুবে যাই চোরাবালির অমোঘ পতনে।
অনন্ত জিজ্ঞাসা বিলীন হয় ধূসর কুয়াশায়
আহা! জীবন এতো ছোট কেন?