আলমগীর রেজা চৌধুরীর পাঁচটি কবিতা
কবিতা এক
অজানা স্পর্শে চলে তনুকায়, রক্তে মাতম ছিলো
তারপর তোমার বুকে হাত দিয়ে দেখি
এইখানে ভালোবাসা আছে কিনা!
অতন্দ্রিলা দিঘির মতো চোখে মায়া জড়িয়ে বলে,
তোমার জন্যই…
অর্জুন আকষ্ঠ তৃষ্ণা নিয়ে আবিষ্কার করে
চিরন্তন এক জীবনকথা,
বাসযোগ্য পৃথিবীর কথা।
সব কিছু ধারণ করে এই জীবন, ভালো।
শুরু হোক, পৃথিবীর জরায়ুতে নতুন ভ্রুণ।
কবিতা দুই
কিছুটা রহস্য থাক, থাকুক জন্মের সকল অর্গল।
ওইখানে লুকিয়ে থাকে
নর্তকীর নিক্কন,
তারপর মদিরাসিক্ত আঁখি খুঁজে নেয় অতন্দ্রিলার
কামজ তনু, উদগ্র দৃষ্টি, প্রেমান্ধ হেলেনিক ছল।
মোহান্ধ অর্জুন বোঝে না কিছু।
তৃণ প্রেমিক অর্জুন,
অবিরল জলপ্রপাত আর জোছনা মৈথুনে
স্নান সেরে উঠে আসা মগ্ন শিব।
ত্রিশূল হাতে যৌবন যজ্ঞের প্রাজ্ঞ পুরোহিত।
অতন্দ্রিলা বোঝে না কিছু!
কবিতা তিন
ওই বাহু সহস্র ভাঙনের মধ্যে বেড়ে-ওঠা অজয় যুবরাজ
তোমাকে অভিনন্দিত করি। মানুষেই পারে সভ্যতা নির্মাণ।
অর্জুন, তুমিই সেই মহান পুরুষ
উচাটন উনিশ বছর;
এই নারীত্বের অধীশ্বর, গ্রহণ করো, অতন্দ্রিলার কাঙাল যৌবন।
নারীকে চেনে সবাই
জন্ম-কোরকের গর্বিত রমণী।
এই হাতে গোলাপ বুনেছি।
কবিতা চার
ওভাবে তাকিও না কুমারী। বদনখানি অবনত করো,
ওই তো বিষলক্ষ্যা ছুরির মতোন দৃষ্টি,
ওখানে লুকিয়ে আছে বৃন্দাবন কুমার।
হার্পুনে বেঁধা সহিষ্ণু তিমি,
উত্তাল তরঙ্গমালায় হাবুডুবু কাতর ডলফিন
কেবলি তটরেখা ভুল করে।
জন্মের ধূসর ছাই মাখামাখি দুঃখী শিশু,
ক্রমান্বয়ে লক্ষ্যভেদী অর্জুন
নারীকে চিনি, চিনে রেখেছে ট্রয়ের বিরান মাঠ;
তবুও রজনী লোভী করে তোলে!
অতন্দ্রিলা, স্পর্শ করো না।
কবিতা পাঁচ
জ্বলন্ত এ আগুনের স্বাদ বড়োই লোভাতুর, মায়াময়।
তারপর একদা এক নারীর গর্ভে যে শিশু জন্ম নেয়,
পৃথিবীর সন্তান।
নারীত্বের তৃষ্ণা অতন্দ্রিলা ভালোবাসা স্পর্শ করে,
যুগান্তরের বিন্যাস, সৃষ্টি বিচিত্র সোপান
মানব গেরস্থালি।
অতন্দ্রিলা এলোচুলে আকীর্ণ বিস্তৃত নিসর্গ জড়িয়ে রাখে।