গদ্য

গদ্য // জলন্ত ইতিহাসের সোনালী পাতা কামাল লোহানী// জান্নাতুন নিসা

বিষণ্ন একতারায় ভর করে শত ক্রান্তি, শঙ্কা কিংবা মহামারী বাঙালি জীবনের দিগন্তজুড়ে বরাবরই আঁছড়ে পড়েছে হিমচাঁদ ঢেউ হয়ে! যার উন্মাদনায় যুক্ত হয়েছে ঐতিহাসিক নানা ঘটনা। সেই ঘটনার প্রবাহমানতায় চিরবিদ্রোহীরূপে নিজেকে এগিয়ে দিতে ব্যাকূল হয়েছেন শুভ্রতায় পল্লবিত এক অসম সাহসী মানুষ, সংস্কৃতিজন কামাল লোহানী। যিনি স্বীয় কর্মের মধ্যদিয়ে হয়ে উঠেছেন জলন্ত ইতিহাসের সোনালী পাতা। যার আলোকিত ডঙ্কায় বেজে উঠেছে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের প্রলয়বীণা। আর বিবাগী শব্দের নিত্য ঝঙ্কারে আমরা পেয়েছি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলনের প্রশ্রয়। তাইতো শবেদের শব্দে বাঙালির তন্ত্রবদ্ধ আকাশ চূর্ণ হয়ে যখনই অবহেলার বেহুলায় ভেসেছে, তখনই আবু নঈম মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খান লোহানী দৃঢ়তার সঙ্গে সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক প্রতিটি আন্দোলনে পথ হেঁটেছেন নিশ্চিন্ত শিশুমনের জয়গানে। সাংবাদিকতা দিয়ে তাঁর পেশাজীবন শুরু হলেও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে যুক্ত করেছেন মুক্তির উন্মাদনায় ছুঁটে চলা গেরিলা ছন্দের ন্যায়। আর কোটি প্রাণের সম্মিলিত বৈরাগ্যে এদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন ঝলমলে শতকের সাহসীকতায়।

১৯৩৪ সালের ২৬ জুন, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানার খান সনতলা গ্রামে বাবা আবু ইউসুফ মোহাম্মদ মুসা খান লোহানী এবং মা রোকেয়া খান লোহানীর ঘর আলো করে জন্মগ্রহণ করেন কামাল লোহানী। তবে মাত্র সাত বছর বয়সে মাকে হারিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিভীষিকার মধ্য দিয়ে কলকাতার শিশু বিদ্যাপীঠে শুরু হয় তার শিক্ষাজীবন। সেইসঙ্গে ঘাসের কম্পিত শিশিরকণার মতো টগবগে দুপুর বেয়ে শুরু হয় তার জীবন নদীর বয়ে চলা। দেশভাগের পর ১৯৪৮ সালে চলে আসেন পাবনায়। পাবনা জিলা স্কুল থেকে ভাষা আন্দোলনের বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এ সময়েই হয়তো তিনি শিশিরভেজা আকাশজুড়ে দেখেছিলেন মুক্তির অগ্নিস্ফূলিঙ্গ, তাইতো নিজেকে যুক্ত করেন রাজনীতিতে। যোগ দেন পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টিতে। পাবনায় রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে গড়ে উঠা আন্দোলনে যোগ দেন তখন। এরই মধ্যে পাবনা অ্যাডওয়ার্ড কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পরেই অন্ধকারের বুক চিরে আলোকিত স্বপ্নের হাত ধরে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ইতি টানেন তিনি। আর মুক্তির কুঠারাঘাতে সাম্রাজ্যবাদের জংলাপথ ভাঙতে ব্যাকূল হয়ে উঠেন।

রাজনীতিতে যুক্ত এই মানুষটি জল-বায়ুহীন বিবর্ণ দেশের গোপন কুড়েঘরের বাকল ছিঁড়ে মনোনিবেশ করেন সাংবাদিকতা ও সংস্কৃতিচর্চায়। সাম্প্রদায়িকতার বেয়োনেটে অঙ্কিত দুর্বল কালির কম্পিত রোদ্দুরে তিনি এঁকে চলেন ছোপ ছোপ বিদ্রোহের নীলাভ বার্তা। আর ১৯৫৩ সালে প্রথমবারের মতো গ্রেপ্তার হন আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ায়। সে সময় পাবনার তৎকালীন জিন্নাহ্ পার্কে (বর্তমান স্টেডিয়াম) মুসলিম লীগ কাউন্সিল অনুষ্ঠানের সময় অন্য নেতাদের সঙ্গে নুরুল আমিনও এসেছিলেন। তাঁর আগমনের প্রতিবাদে যে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদী বিক্ষোভ করেন, তাঁদের একজন ছিলেন কামাল লোহানী। পাবনার রাজনৈতিক নেতা, এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যাপক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তিনি গ্রেপ্তার হন। এরপর একাধিকবার তাঁর জায়গা হয় জেলখানায়। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের পক্ষে কাজ করেন। ১৯৫৪ সালের ২৯ মে ৯২-(ক) ধারা দিয়ে পূর্ববাংলায় ‘গভর্নরের শাসন’ চালু করার পর আবার ধরপাকড় শুরু হয়। এ সময় আবারও গ্রেপ্তার হন তিনি। ১৯৫৫ সালের জুলাই মাসে ছাড়া পান। এসময় তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দীন আহমদ প্রমুখের সঙ্গে একই জেলকক্ষে বন্দিজীবন কাটান। সেই বন্দী দিনগুলোতে তিনি বঙ্গবন্ধুর সন্নিকটে আসেন এবং তাঁর ব্যক্তিত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে ওঠেন। বাড়িতে পড়াশোনা নিয়ে মতবিরোধ হয়। ছোট চাচা তাসাদ্দুক লোহানীর কাছ থেকে ১৫ টাকা নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। উত্তপ্ত পূর্ব বাংলার মরুময় জলীয়রেখায় শুরু হয় তাঁর জীবনসংগ্রাম। অবশ্য তত দিনে তিনি মার্ক্সবাদের অনুসারী হয়ে উঠেন আর আজীবন সেই আদর্শে অবিচল থেকেছেন। আর ছন্দময় বাতাসের তীব্র লেলিহানের সঙ্গে পথ চলতে শুরু করেন সাংবাদিকতার জীবন। ১৯৫৫ সালে যোগ দেন দৈনিক ‘মিল্লাত’ পত্রিকায়। চাকরি পেতে সহযোগিতা করেন চাচাতো ভাই ফজলে লোহানী। এ বছরই তিনি ন্যাপে যোগ দেন এবং জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৫৮ সালে সামরিক আইন জারি হলে তিনি অদেখা আকাশের শামিয়ানায় চেপে আশ্চর্য কৌণিকতায় আত্মগোপনে যান। অনেকটা সময়ের ভাবনায় স্বার্থকতার মালা গাথার অনুশীলনে ব্যস্ত থাকার মতো।

জীবন থেকে হারানো সময় যে কখনও কখনও আমাদের বোধের দুয়ারে যোগ করে নান্দনিকতার ছন্দময় উৎস তা আমরা দেখতে পাই কামাল লোহানীর আত্মগোপন থেকে প্রকাশ্যে আসার পরবর্তী সময় দেখে। কারণ আত্মগোপণ থেকে ফিরে আসার কিছুদিন পরেই নাচের প্রতি আগ্রহ জন্মে তাঁর। ১৯৫৮ সালে তিনি জড়িয়ে পড়েন নৃত্যশিল্পের সঙ্গে। বুলবুল ললিতকলা একাডেমির হয়ে কামাল লোহানীর নৃত্যগুরু জি এ মান্নান ‘নক্সী কাঁথার মাঠ’ প্রযোজনা করলে কামাল লোহানী তাতে অংশ নেন। ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’-এ কামাল লোহানীর দেখা মেলে একজন কৃতী নৃত্যশিল্পী হিসেবে। পাকিস্তান সাংস্কৃতিক দলের সদস্য হয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশেও যান তিনি তখন। এর পাশাপাশি তখন তিনি ধারাবাহিকভাবে চাকরি করেন দৈনিক ‘আজাদ’, দৈনিক ‘সংবাদ’, ‘পূর্বদেশ’-এ। এসময়েই তীব্র প্রতিবাদ আর বজ্র শপথের দুরন্ত অভ্যাস যুক্ত হয় তাঁর পথচলায়। এর মাঝেই চাচাতো বোন দীপ্তি লোহানীকে ১৯৬০ সালে বিয়ে করেন তিনি। ২০০৭ সালের ২৪ নভেম্বর দীপ্তি লোহানী চিরঘুমের দেশে পাড়ি জমান। তাঁদের এক ছেলে দুই মেয়ে—সাগর লোহানী, বন্যা লোহানী ও ঊর্মি লোহানী। ১৯৬১ সালে রবীন্দ্র শতবর্ষ পালনে পাকিস্তানি নিষেধাজ্ঞা জারি হলে ছায়ানটের নেতৃত্বে কামাল লোহানী ও হাজারো রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক কর্মী সাহসী প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ১৯৬২ সালে স্বল্পকাল কারাবাসের পর কামাল লোহানী ‘ছায়ানট’ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হন। সাড়ে চার বছর এই দায়িত্ব পালন করার পর ১৯৬৭ সালে গড়ে তোলেন ‘ক্রান্তি’ নামে সাংস্কৃতিক সংগঠন। ১৯৬৭ সালের ২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠীর উদ্বোধন হয় ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে। আয়োজন করেন গণসংগীতের অনুষ্ঠান ‘ধানের গুচ্ছে রক্ত জমেছে’। নাটক ‘আলোর পথযাত্রী’ পরিচালনা ও এতে অভিনয় করেন কামাল লোহানী। নৃত্যনাট্য ‘জ্বলছে আগুন ক্ষেতে ও খামারে’ বিবেকের ভূমিকায় নৃত্য করেন তিনি। সেসময় ‘শ্যামা’ নৃত্যনাট্যে বজ্রসেনের চরিত্রের জন্যে তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানে পূর্ব বাংলার শিল্পীরা যে ভূমিকা রেখেছেন, তার সঙ্গেও কামাল লোহানী সর্বতোভাবে জড়িত ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে কামাল লোহানী একজন শিল্পী, একজন সাংবাদিক ও একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে কালক্ষেপণ না করে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। ষাটের দশক থেকে কৌণিকতা ও বিপ্রতীপতার সহাবস্থান থেকে রাজনীতি আর সংস্কৃতি যখন পরস্পর হাত ধরাধরি করে চলেছিলো, তখন শৃঙ্খলিত গতির নিরবচ্ছিন্নতাকে ভেঙে সেই বন্ধনের জয়গানে এগিয়ে চলা অগ্রনায়কদের একজন ছিলেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধের সময় কামাল লোহানী স্বাধীন বাংলা বেতারের সংবাদ বিভাগের দায়িত্ব নেন। ১৯৭১ সালের ২৫ ডিসেম্বর তিনি দায়িত্ব নেন ঢাকা বেতারের। দায়িত্ব নেয়ার পর যুদ্ধ পরবর্তী বিধ্বস্ত বেতারকে পুনর্গঠনে মনযোগী হন৷ ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে ধারাবিবরণী দেন তিনি। এছাড়া ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বঙ্গবন্ধুর কলকাতা সফর উপলক্ষে দমদম বিমানবন্দরেও ধারাবিবরণী দেন তিনি। দেশ স্বাধীন হলেও প্রশাসনে পরিবর্তন না আসায় বেতারের চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে ১৯৭৩ সালে সাংবাদিকতায় ফিরে এসে যোগ দেন ‘দৈনিক জনপদ’-এ৷ ১৯৭৪ সালে ‘বঙ্গবার্তা’, এরপর ‘দৈনিক বাংলার বাণী’ পত্রিকায় কাজ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন সরকার সংবাদপত্র এ্যানালমেন্ট অধ্যাদেশ জারি করে মাত্র চারটি পত্রিকা ছাড়া সব পত্রিকা প্রকাশনা বন্ধ করে দেন, তখন নির্মল সেন ও কামাল লোহানী বাকশালে যোগদানে অস্বীকৃতি জানান। এদিকে ১৯৭৫–এর আগস্টে বঙ্গবন্ধুর মর্মান্তিক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের পর বিপর্যস্ত বাংলাদেশের অনিশ্চিত যাত্রা শুরু হয়। এই অনিশ্চিত সময়ে গড়ে ওঠা সামাজিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনে কামাল লোহানী নিজেকে যুক্ত করেন। এরপর ১৯৭৭ সালে রাজশাহী থেকে প্রকাশিত ‘দৈনিক বার্তা’র নির্বাহী সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯৭৮ সালে তাঁকে সম্পাদক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। যদিও তিনি সরকারি পত্রিকা ‘দৈনিক বার্তা’র সম্পাদক কিন্তু সর্বস্তরের সংস্কৃতিকর্মীদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ অব্যাহত ছিল। ১৯৮১ সালে তৎকালীন তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিরোধ হলে ‘দৈনিক বার্তা’ছেড়ে ‘বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট’ এ যোগ দেন। ১৯৮১ সালে চাকরিতে ইস্তফা দিয়েই নবোদ্যমে সাংস্কৃতিক আন্দোলনে সম্পৃক্ত হন তিনি। ফয়েজ আহমেদের সঙ্গে মিলে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯১ সালে তিনি প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ষোলো মাসের মাথায় বিএনপি সরকারের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিরোধ হওয়ায় তিনি পিআইবিতে ফিরে আসেন। ২০০৮ সালে দুই বছরের জন্য আবার শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। পেশাগত জীবনে তিনি সাংবাদিক ইউনিয়নের বিভিন্ন পদে থেকে এবং শেষাবধি সভাপতি হিসেবে সাংবাদিকদের পেশাগত মানোন্নয়ন ও জনগণের মৌলিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নিরলস কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

জীবনের সীমানাহীন নদীতে লেখনীতে পূর্ণ জলের বিছানা পেতেছেন কামাল লোহানী। তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে-আমরা হারবো না, সত্যি কথা বলতে কী, যেন ভুলে না যাই, মুক্তিসংগ্রামে স্বাধীন বাংলা বেতার, রাজনীতি মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীন বাংলা বেতার, মুক্তিযুদ্ধ আমার অহংকার, এ দেশ আমার গর্ব, আমাদের সংস্কৃতি ও সংগ্রাম, লড়াইয়ের গান, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও নৃত্যশিল্পের বিস্তার, দ্রোহে প্রেমে কবিতার মত এবং শব্দের বিদ্রোহ৷ কামাল লোহানী ২০১৫ সালে সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য একুশে পদক লাভ করেন৷ এছাড়া তিনি কলকাতা পুরসভার দ্বিশতবর্ষ সম্মাননা, প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক সম্মাননা, রাজশাহী লেখক সংঘ সম্মাননা, ক্রান্তি স্মারক, ঋষিজ সম্মাননা ও স্মারক, জাহানারা ইমাম পদকসহ বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন৷ আজন্ম প্রতিবাদী মানুষ কামাল লোহানী, আমৃত্যু প্রতিবন্ধকতার রুদ্ধদ্বার ভেঙে বীরদর্পে পথ হেঁটেছেন আর নশ্বর বৈরাগ্যের রক্তস্রোতে গেয়েছেন মুক্তির জয়গান। মৃত্যুর আগ মূহুর্ত পর্যন্ত নগ্ন আগুনের ফসকে যাওয়া সংঘাতেও শুভ্র বাসনার দৃপ্ত পদক্ষেপে খুঁজেছেন পাঁজরভাঙা সংস্কৃতির সুখী পল্লব। আর সুসজ্জিত অন্ধকারের স্তব্ধ ক্যানভাসে এঁকেছেন অর্থহীন পলাশের বিদীর্ণ স্বপ্ন। সর্বোপরি, বাঙালি সংস্কৃতির রক্তিম অভিলাষে সংস্কৃতির পুরোধা কামাল লোহানী জ্বেলেছেন ঐতিহ্যের চৈতন্যঘেরা সোনালী ভুবন।

লেখক : কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক ও নারীনেত্রী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *