করোনা নিয়ে শিহাব শাহরিয়ার এর কবিতা বোধ
আমি কী আগের মতই আছি?
আমার কিছুই মনে পড়ছে না
থুবড়ে পরা নিঃসঙ্গ নির্জন গলির
গাছ-পাতারা নড়ছে বাতাসে ঠিকই
কিন্তু আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না
সিঁড়ির অন্ধকার পেরিয়ে
ছাদের জ্যোৎস্নায় ভিজেছি কালও
কিন্তু চোখে পড়েনি চাঁদ
তবে কী আমার বোধ মরে যাচ্ছে
তবে কী আমার কান মরে যাচ্ছে
তবে কী আমার টেবিল?
আমার হাত!
আমার শহরের সড়কেরা
কেন আজ করেছে অভিমান?
আমি কী আর ধরবো না বোলপুরের পথ?
সমুদ্রজলে ডিগবাজি খাওয়া ডলফিন
একা একাই তবে উড়াল দিবে শূন্যে?
গৃহকালেও ধর্ষিত হয় নারীরা
এ কোন অন্ধকার নেমে এলো আজ?
কোথায় তবে সাম্পানের সুর, চিবুকের স্নিগ্ধতা?
শাদা মোড়কে-ওরা যারা যাচ্ছে
তারা কী ফিরবে না আর?
কোন এক নিঃসীম বেদনায়
আমি ক্রমশ ডুবে যাচ্ছি
না, আমি ডুবে যাচ্ছি না
আমি, আমরা তো মানুষ
দুঃসময়ের দুঃখ
একমাত্র ভুলতে পারে মানুষ
নিঃসীম বেদনা আর গৃহকালের অব্যর্থ সময় থেকে
মানুষ একদিন জেগে উঠবেই
মানুষ ভুলে যাবে
উহান, তেহরান, রোম, মাদ্রিদ,
নিউইয়র্ক, দিল্লি, ঢাকা, দুবাই
ভুলে যাবে
লকডাউন, আইসুলেশন, কোয়ারেন্টাইন, করোনা
তাকে যে ভুলতে হবেই
মানুষেরা আবারও ফিরবে আলোর পৃথিবীতে
পায়ের শব্দে শব্দে জেগে উঠবে নিঃসঙ্গ জনপদ
শ্যামলিমার সবুজে খেলবে কার্তিকের ঘন পূর্ণিমা
পাখি আর মানুষ উড়বে এক সাথে, একই চৌহদ্দিতে
ঘুমের ভিতর স্বপ্ন অথবা স্বপ্নের ভিতর ঘুম
আন্তঃনগর ট্রেনের মতো ছুটে যাবে বুবুদের সোহাগপুর
নারীরা দুলবে ফাল্গুনের ফুলে ফুলে
সাগরের ফেনাজল ছুঁয়ে দিবে তরুণের উরু
ঘুম নয়, ঘুম নয় আর নয় আর অবসর
মানুষকে ডাকছে অরুন্ধতী সময়
আমি দেখতে পাচ্ছি
স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি
মানুষেরা পায়ে পায়ে পার হচ্ছে বালুচর
মানুষেরা ছুঁয়ে দিচ্ছে উপত্যকার আঁচল
শিহাব শাহরিয়ার
“করোনা”
নিয়ে কবিতা বোধ।
কবিতাটি অসাধারন হয়েছে। কবিতার ভিতর বাহিব মিলে সে তো একাকার একটি চমৎকার আধুনিক কবিতা।করোনার যে শবটি সাদা পোশাকে বিদায় নেয় সে কী আর কখনো ফিরে আসবে? কবির ভিতরে চিন্তার বাক ঘোরে। সামাজিক অবক্ষয়ের ধর্ষণের কথাও বাদ যায়নি। মানুষ একদিন করোনার এই ভয়াবহতার কথা ভুলে যাবে, মানুষ আবার সাভাবিক জীবন যাপনে ফিরে আসবে – কবি আশাবাদী। তার কবিতায় প্রেম, প্রকৃতি, রূপান্তরের
আলোকে কবি বিচরন করেন সাভাবিক চেতনায়।
রূপ অলংকারে সাজানো,নান্দনিকতার ছোয়া, আছে উপমার গাঁথুনি। কবিতাটি সুন্দর হয়েছে।
…. কবি শওকত আলম