স্বপ্নাকর- এর কবিতা
কারো কেউ নয়
সমুদ্রমন তলে পলি জমে ধীরে ধীরে
গন্ডোয়ানার মতো দুপাশে চাপ বাড়ে
একদিন ভয়াবহ হয়ে ওঠে পারিপার্শ্বিক, চরম
ভঙ্গিল পর্বত যেন মাথা তোলে ভয়াল বিক্রম
অভিমান গুমরতে গুমরতে বের করে
ব্যাঙের আঠালো জিহ্বা; টেনে খোলে
কবেকার ভাঁজ করা লুকানো সন্দেহ অবসাদ
সম্পর্ক চিবনী ভাঙে, বৃষ্টি ঝরে, ভরে যায় খাদ
এভাবে খাদ গিরিখাত ঘিরে ভাসে ক্যানিয়ন
দুঃখের বোঝা বয় নদীঃস্বলার একক যাপন
একাকিত্বের মগ্নতাকে ঘিরে নেচে ওঠে কিছু কিছু স্মৃতির পাহাড়
নুড়ি, বালি, পাথর নয়, কঠিন শিলাটি হয়ে বোঝে; কে বা কার!
ভোকাট্টা ঘুড়ি
লাট খাচ্ছে ইচ্ছেগুলো নাগালের বাইরে
স্বপ্নেরা প্রথাগত দুরত্ব রেখে চলে
কেটে গেলে সম্পর্ক সুতো
না সে আমার হলো, না তোমার
মেঘে মেঘে, আকাশে বাতাসে শতছিন্ন হলো
হাতে ধরা স্বপ্নলাটাই বলে যায়
কেউ ছিল, আজ সে নাই
শেওলা-দল
কোনো না কোনদিন
দুইপাশের পারই ভাঙে
ভাঙে কারোর আশা, কারোর ভরসা
ইচ্ছে আর স্বপ্নের ভেসে যাওয়া লাশ
ডুবে যাওয়া আর্তনাদ
এই সব…
নদীর চোখ খোলা থাকে বারোমাস
কমবেশী বুক ভরে থাকে ঘোলা জলে
তৃষ্ণাদগ্ধ স্রোতে প্রবাহণ বয়ে যায়
চোয়া ঢেকুরের মতো ঘূর্ণিস্রোত ওঠে
ঢেউয়ের মতো আর্তচিৎকারে ফাটে জল
মুহূর্ত আসে ফুরিয়ে যায় কালে
কে বা কারা যেন ভেসে যায় অবিরাম
তারা বুকে খাবি কেটে যায়
শেকড়ের ছোঁয়া কই
তারা কেউ ফোটে না হয়ে শতদল।
ভালোবাসার ডাক
ডাক দিয়ে গেছে কেউ,-
লাল টুসটুসে তেলাকুচফল আধখানা খাওয়া
টেপরেকর্ডারে বাজছে অসমাপ্ত গজলের সুর
কুচকে মুচকে রয়েছে সোফার কভার
হাওয়ায় উড়ছে ম্যাগাজিনের পাতা
রেকাবিতে রাখা আপেলও আর নেই
ভরা বোতলের জল আধখানা ফাঁকা
ঘরময় ছেয়ে আছে অচেনা আতরের ঘ্রাণ
দরজায় জমে আছে কিছু জুতোর ধুলো
সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেছে পায়ের ছাপ
দুয়ারে ছড়ানো কালচে পানের পিক,
গ্রিলের খাঁচেতে অদর্শনের ছটফট বলছে
কেউ এসেছিল আজ, দিয়েছিল পাখিডাক।
নিঃস্ব প্রায়
পুড়ে ছাই হয়ে গ্যাছে প্রদীপের বুক
পলতে দেহটিও সাপের মতন শুয়ে
এঁকে বেঁকে রয়েছে পিলসুজের ‘পরে
সাধ আর সাধ্য সাধনার শিখাটি নেই।
এখন কাকে ডাকতে পারে হাহাকার
শব্দ যেখানে ক্ষয়ে ক্ষয়ে ফুরিয়েছে
ধস সেখানে মাঝ পথে ঠিকানা হারায়
রাত্রিকে নামিয়ে আনে বুকের খাঁচায়
ফুরিয়ে গেছে চৌদিক, বৃত্তের কাছে
কেন্দ্রে খুঁটি বেঁধে বৃত্তময় ঘোরে দুঃখ
একঘেয়ে শীত ভিজে যায় ঝরনায়
রাতশেষে করে বসন্তের আরাধনায়।
প্রতিভাবান কবি , খুব সুন্দর আপনার লেখা , চলুক আপনার কলম , নমস্কার শ্রদ্ধেয়া ।