গুচ্ছ ছড়া ওয়াহিদ ওয়াসেক
শীত এসেছে সূর্যবিহীন ভোরে
শীত এসেছে পাখির ডাকে সূর্যবিহীন ভোরে—
কেমনে এলো পালকি চড়ে? পাখির মত ওড়ে?
না, না—
বলছি শোনো, তা—না!
শীত এসেছে হিম কুয়াশা, শিশিরভেজা ঘাসে—
বাংলা দু’টো মাসে!
চাষার হাসি, গানে—
শীত এসেছে এই প্রকৃতির ভালোবাসার টানে!
হ্যালো—
কোত্থেকে সে এলো?
একই কথা, পাখির ডাকে সূর্যবিহীন ভোরে—
ছয়টি ঋতু, নয় তো বলো মাস বারোটি ঘোরে!
চাঁদ তারাদের দেশে
আব্বু বলেন খোকন সোনা
একটু বসো পাঠে—
অ, আ, ক, খ পাঠের শেষে
ঘুমেই যাবে খাটে।
আম্মু বলেন জাদু আমার
এই কপালে চুমে—
এই যে দ্যাখো জুমন, সুমন
পড়ছে ছোট জুম এ!
তাই শোনে এই খোকন সোনা
জিদ করে খুব কাঁদে—
বললো বুবু— এই কোলে আয়
ডাকছে তারা, চাঁদে।
বুবুর কথায় কান্না উধাও
উঠল খোকন হেসে—
বললো বুবু নাও না আমায়
চাঁদ, তারাদের দেশে!
দুষ্টুমি সব বাদ
এই যে শোনো শাহান পাশা, দুষ্টু রাজার সই—
করবে না আর অস্থিরতা করবে না হইচই।
ময়লা জামা পরবে না আর ছানবে না আর ধূল,
গাছের পাতা ছিঁড়বে না আর ছিঁড়বে না ওই ফুল।
মুরগিটা ওই ডাকলে কভু করবে না কককক—
ছুড়বে না আর ঢিলগুলো ওই দেখলে টিয়ে, বক।
ধরবে না আর জোনাক পোকা কিংবা ছোটো ফড়,
শেয়াল, কুকুর দেখলে ওসব বলবে না ধর, ধর!
ওই যে বিলাই যুবা মিটুর ধরবে না আর কান—
করবে না আর কারোর সাথেই হঠাৎ অভিমান।
উঠবে না আর গাছে গাছে করবে না লাফ-ঝাঁপ,
দেখলে কভু মারবে না আর টিকটিকি বা সাপ।
ঘুরবে না আর বন-বাদাড়ে ওই পূবালি হাট—
ফাঁকি-ঝাঁকি করবে না আর লেখালেখির পাঠ।
অসময়ে করবে না আর সকাল, দুপুর ভোজ,
খেলবে না আর পূর্ব মাঠে পাঠ ফেলে রোজ-রোজ।
খৈইয়া খালে আর যাবে না চড়তে ভেলা, নাও—
সন্ধ্যাবেলা ফিরবে না আর ফেলে জুতোটাও।
তবেই আম্মু বলবে তোমায় টুকটুকে গোল চাঁদ,
শপথ করো, শপথ করো দুষ্টুমি সব বাদ!
শেয়াল ও কুমির
এক যে ছিল শেয়াল মিঞা
থাকতো গহীন বনে
মস্ত বড়ো খাতির ছিল—
কুমির আলীর সনে।
কুমির আলী প্রশ্ন করে—
ওরে শেয়াল মিঞা
যাচ্ছে ক্যামন? খাচ্ছ কী? আর
আনাজপাতি নিয়া?
মুচকি হেসে শেয়াল মিঞা—
বলে কুমির আলী
রোজ সকালে লাগেই আমার
মুরগী যে এক হালি।
কুমির আলী অবাক! এ কি—
আর কী কী খাও বলো?
গরু, ছাগল, মহিষ না কি?
নানান রকম ফলও।
শেয়াল মিঞা লেজুড় নেড়ে—
মুচকি হেসে, হেটে—
বলে, মুরগী খেলেই আমার
আর লাগে না পেটে।