কবিতা।। শিহাব শাহরিয়ার
কতটুকু হেঁটেছেন মিস
পাড়ের কাছেই দাঁড়িয়ে ছিল যুবক
নোঙর করেন নি আপনার নাও
চোখের কাছেই ছিল সে
খোলেন নি আপনার গাড়ির গ্লাস
ফুটপাত ধরেই হাঁটছিলেন যুবক
শাঁই করে চলে গেছে আপনার বিএমডাব্লিও
ক্লাসে—টিচারের বেদিতে দাঁড়িয়ে
কখনো ঠিক করবেন না চুল
দুষ্টু ছেলেরা অট্টহাসিতে মেতে উঠবে তবে
বরং নদীর কিনারে হাঁটুন
সানগ্লাস দিয়ে চোখ দেখুন
ফুটপাতের চানাচুর খেতে নামুন
বিচিত্র!
ফেলে আসা বালকেরা
ডালিম রঙের শাড়ি খুব পছন্দ করে
মিস?
আপনি অদ্ভুত বেদনায় ভোগছেন!
২.
সারাবিশ্বেই বসন্ত নামে
কিন্তু ‘ফুল ফুটুক’র কবি নেই
অথচ আপনি
অরুন্ধুতী’র গদ্যের গন্ধ নেন
হলুদ টিপ কটকটা
খয়েরি টিপেই আপনি সুন্দর
‘আপনি কি একদিন
আমাদের সঙ্গে স্ট্রীট ধরে হাঁটবেন’?
পিছনের ছেলেটি তাহলে বলবে:
‘মেম আপনি অনেক গ্লামার গার্ল’
অন্যদিন আপনি ছিটকে যাবেন
তখন ঘাটের কিনারে নিঃসীম অন্ধকারে
উড়বে আপনার বিদেহী চোখ, চশমা
অতএব
নদীর পারে পড়ে থাকবে আপনার শাড়ির পাড়
এসব বেদনাকথা দলিলে লেখা থাকে না
মিস?
৩.
যুবক বলল: প্রিয় মিস
চলুন আমরা আকাশ বিক্রি করে দিই
অথবা দুর্বাঘাসের শিশির?
আপনার ওড়নার প্রশংসা করতেই হয়
আগেকার কোনো একদিন
আপনার সাদা ওড়নাটি
অভিমানে সাইকেলের চেইনে
মুখ লুকিয়ে ছিল
মিস
আপনি
মেয়েবেলায় খুব শক্তিশালী ছিলেন
আপনার সন্ধিক্ষণের রক্তক্ষরণ
কচুরিপানার মতো ভেসে গেছে
অথচ দাগের চিহ্ন নেই
তবু পুরুষের চোখ
জাগায়নি আপনার কামভাব
আপনি শিহরিত হননি
বৃষ্টির সাদা জলে
আসলেই আপনি হতভাগী
সন্ধ্যার হেডলাইটেও
দেখতে পান নি শিয়ালের চোখ
জানেন তো শ্রীমঙ্গলে সন্ধ্যাবেলায়
শিয়ালেরা রাস্তার এপার থেকে ওপারে যায়
গহনার দোকানগুলো
খেয়ে ফেলছে আপনার সমস্ত বিকেল
রাত গভীর হলে তাই
মাথা নিয়ে কাতরান
বরং
মোবাইলে চোখ বিক্রি করে দেন
বলছি, আপনার চশমার চোখের কথা?
কেউ আর বলবে না ‘চোখ যাবে চোখ’!
৪.
মিস?
আপনি কি চেয়ারে বসে
দেখতে পাচ্ছেন
দোকানের চায়ের কাপগুলো
কনডেন্স মিল্কের ছোঁয়াতে
এক এক করে গর্বভতী হচ্ছে
অথচ চায়ের চেহারায় কমলা রং নেই?
মিস?
আপনি কি কোনোদিন
কুমারীর ডুব সাঁতারে কেলি করেছেন?
আপনি নিশ্চয়ই জানেন?
ঘুণে ধরা ঘরে
বিড়ালের সাদা লোম পড়ে থাকে
পাশের ফ্লাটের মেয়েটি ওড়না পরে না
আপনি কেন তাকান ওর ঠোঁটের নিচে?
বৈরিতা ভালো না
এক যুবক বৃদ্ধ বয়সেও
আপনাকে খুব মিস করে!
আপনি সন্ধ্যার রবীন্দ্রনাথ নিয়ে হাঁটবেন, হ্যাঁ
মিরপুর, ০২ মে ২০২৫