নির্বাচিত ছড়া- গোবিন্দলাল হালদার
পাখির কথা
উড়তে পারি
ঘুরতে পারি
এই পৃথিবীর অনেক দেশ।
আমার পালক
স্মৃতির শোলক
কখনও হই নিরুদ্দেশ।
কোথায় থাকি
কেমন থাকি
পাখির জীবন, জীবন কী।
এই পৃথিবী
বিরাট ছবি
পৃথিবীটাই আপন কী।
মায়া ঘুম
চুক চুক এই টুক
আর দুধ পান না
চাঁদ মামা ডেকে বলে
মিথ্যে গান না
মা স্নেহময়ী তাই
রাগ- টাম চান না।
অবশেষে হেসে হেসে
দুধ খেয়ে দেই ঘুম
আদরিনী মা গালে
এঁকে দিলো মায়া চুম।
স্বপ্নবীজ
বিলিয়ে দিলাম হাসির মাঠে
মনের স্বপ্নবীজ
আগামিতে ফলবে খুশি
জায়গা নিবেন লিজ।
কাগজপত্রে দেয়া আছে
নিয়ম নীতি বিধি
বলুন কথা মুঠোফোনে
নবীন চরণ নিধি।
সূবর্ণ এই হাতের সুযোগ
ফসকে যদি যায়
স্বপ্নবীজের ঘাটতি হবে
সুখের দুনিয়ায়।
দুঃখ মনে
দুঃখ মনে রুক্ষ হলে বুকে ডাকে খরা
মিষ্টি কথা তিক্ত হলে বেঁচে থেকে মরা।
দুঃখ মনে রুক্ষ হলে বুকে ডাকে খরা
কাছে যারা বলে তারা মন্দ সুরে ছড়া।
দুঃখ মনে রুক্ষ হলে বুকে ডাকে খরা
রিক্ত মনে ক্ষণে ক্ষণে আসে যত জ্বরা।
দুঃখ মনে রুক্ষ হলে বুকে ডাকে খরা
শূন্য শূন্য ভাবে গণ্য অন্য কিছু ধরা।
কোন কথা
কোন কথা মনে জাগে ভাবে ভরা ফুল
কোন কথা ভেসে ওঠে মনে বলে ভুল।
কোন কথা সংকেতে বোঝাবে তা ভুল
কোন কথা দিকহারা পায় না তো কুল।
কোন কথা বুকে ফোটে মৌমাছির হুল
কোন কথা পাড় ভাঙে বড় নদীর কূল।
কোন কথা প্রাণ মারে সাংঘাতিক শূল
কোন কথা জ্বালা দেয় বিষবৃক্ষের মূল।
কোন কথা মন মজায় নয় তা তো গুল
কোন কথা অতি মহৎ সব কথার মূল।
আমি কই যেন হারাবো
আমি কই যেন হারাবো
খুশির দিনে সোহাগ কিনে পা দুটি বাড়াবো
ওই মাঠ ঘাট তেপান্তরে সবুজ ঘাস মাড়াবো
ক্লান্ত হলে পা থামিয়ে ঝাও তলায় দাঁড়াবো।
আমি কই যেন হারাবো
সুশীল মাঠের মিষ্টি বায়ে ঘাম দেহ জড়াবো
হারিয়ে যাওয়া রঙিন খুশি পূণরায় কুড়াবো
সকল খুশির সাথে মিশে প্রেম ঘুড়ি ঘুরাবো।
আমি কই যেন হারাবো
সন্ধ্যা হলে বইয়ের পাতায় মনপাখি জুড়াবো
জ্ঞান সাগরের গভীর জলে জ্ঞানাঙ্কুর কুড়াবো
মনের খারাপ ইচ্ছাগুলো কাঠ চুলায় পুড়াবো।
মঙ্গল গ্রহ
উড়ছে পাখি ডানা মেলে আমার ইচ্ছা হয়
বহু দূরে উড়ে গিয়ে আকাশ করবো জয়।
ওই দিগন্তে নীলের ছোঁয়া নীল পরিদের দেশ
হেঁটে যাবো আকাশ পথে দূর হবে না শেষ।
জ্ঞানী গুণীর মতো আমি হবোই নভোচারী
আকাশ গঙ্গা পিছে রেখে সুদূর দেবো পাড়ি।
মঙ্গল গ্রহে করবো বাড়ি রূপোর কপাট গেট
বোশেখ মাসে ফিতে কাটা আর হবে না লেট।
রসের হাড়ি
শীতের দিনে দাদুর বাড়ি
খেজুর গাছে রসের হাঁড়ি
দেখতে ভালই লাগে।
গাছি হলে উঠতাম গাছে
মনে আশা জাগে।
পেড়ে এনে রসের হাঁড়ি
বিলিয়ে দেবো বাড়ি বাড়ি
টাটকা রসেই স্বাদ।
আমরা শিশু রস পিয়াসী
নিখাঁদ সুরস ভালোবাসি
পূর্ণ হলো সাধ।
শিশিরবিন্দু কান্না করে
শিশিরবিন্দু কান্না করে কখন
টিনের চালে টুপ টাপ টুপ শব্দ তোলে যখন।
শিশিরবিন্দু কান্না করে কখন
কচুর পাতায় ঠাঁই না হলে গড়িয়ে পড়ে যখন।
শিশিরবিন্দু কান্না করে কখন
কাঁচের উপর জমানো রূপ মুছে ফেলে যখন।
শিশিরবিন্দু কান্না করে কখন
ঘাসের বুকে হিম বাতাসে ছিটকে পড়ে যখন।
স্মৃতির ঘুড়ি
আমি এখন এইখানে ভাই
স্মৃতির ঘুড়ি উড়াই
খোলা মাঠের ভালোবাসায়
পথের পাশে দাঁড়াই।
দূর দিগন্তে চেয়ে দেখি
বুক ছড়ানো মাঠ
সবুজ ঘাসের সাথে আমি
শিক্ষা করি পাঠ।
ঘুড়ি নিয়ে সন্ধ্যার আগে
বাড়ি ফিরি যখন
মাঠ আমাকে ডেকে বলে
কালকে নতুন পঠন।
বিদ্যালয়ের ছুটির ঘন্টা
ঘটাং ঘটাং বাজে
মাঠ আমাকে শিক্ষা দিবে
কথা মনের মাঝে।
মাঠের সাথে পঠন পাঠন।
গল্প ছড়া দিয়ে
বাতাস আমার চিলে ঘুড়ি
কোথায় গেল নিয়ে।
খুবই ভালো লাগলো। পাঠ করে মুগ্ধ হলাম।