ছড়া

নির্বাচিত ছড়া- নুরুন্নাহার ডলি

নুরুন্নাহার ডলি
সূর্যটাকে হাতের মুঠোয়
ধরতে আমি চাই
তুমি বলো কেমনে মাগো
তাকে আমি পাই?
সে তো থাকে দূর আকাশে
আগুন গোলা হয়ে
আমি থাকি এই পৃথিবীর
জল ও বাতাস নিয়ে।
কিন্তু জানি সূর্য শক্তি
সূর্য বলেই প্রাণ
আমি যে মা সূর্য মামা
বলতেই অজ্ঞান।
সূর্য মামার প্রাণ শক্তি
আমার প্রেরণা
তাকে একটু দেখবো ছুঁয়ে
কেমনে বলো না?
একটুখানি হাতের মুঠোয়
নিতে চাই উত্তাপ
মাগো তোমার ভাইকে বলো
দিতে আমায় তাপ।

বৃষ্টি পড়ে ঘরের চালে
বৃষ্টি পড়ে পাতার গায়ে বর্ষা
মেঘের মেয়ে নৃত্য করে
ঝুম ঝুমা ঝুম নুপূর পায়ে।
খালের বাঁকে, ক্ষেতের আলে
বৃষ্টি নাচে গাছের ডালে।
নাচছে ময়ূর পেখম খুলে
বৃষ্টি মেয়ের মধুর ডাকে
ছোট্ট সোনা এসব দেখে
রঙ মিশিয়ে দৃশ্য আঁকে।
জল থৈ থৈ উঠোন জুড়ে
হাঁসের ছানার খুশির ছোটা
বর্ষা এমন রূপশোভাময়
কদম কেয়ার ফুলরা ফোটা ।

চাটগাঁয়ের শিশু সাহিত্য
আমায় শুধু টানে,
ধানের শীষে বাতাস যখন
দোলা লাগায় প্রাণে।
লালদিঘীটার এক ঘড়া জল
আমায় শুধু টানে
ভর দুপুরে ইচ্ছে হলে
ছুটছি তারই পানে।
চাটগাঁয়ের পতেঙ্গা পার
আমায় শুধু টানে
পাহাড় পাহাড় পাহাড় জুড়ে
খুশির আবেগ প্রাণে।
চাটগাঁয়ের সাম্পানটি
আমায় শুধু টানে
সূর্য যখন ডুবে তখন
মায়া ছড়ায় প্রাণে।
চাটগাঁইয়ের পাহাড়ি ফুলটি
আমায় শুধু টানে
হলদে আভায় জড়িয়ে বসে
ভালোবাসার গানে।
চাটগাঁয়ের কর্ণফুলী
আমায় শুধু টানে
বন্ধু সে যে শান্ত মনে
ঢেউ খেলে যায় মনে।
চাঁটগায়ের সবগুলো পথ
আমায় শুধু টানে
ইচ্ছে করে আসি ছুটে
সেই যে পথের পানে।

ওরে গরম চলে যা
আর করিস না ঝামেলা
তোর গরমে হাসফাস
প্রাণী কুলের নাভিশ্বাস।
স্নান করি তিন বেলা
তাওতো গরম কমে না
হাত পাখাতে কুলায় না
বৃষ্টি কেন আসে না।
’আয় বৃষ্টি ঝেঁপে’
রাখবো তোকে দেখে
’কচুর পাতা করমচা’
যাসনে তুই থেকে যা,
রাখবো তোকে ঢেকে
হৃদয় দিয়ে মেপে।

দুষ্ট ছেলে, দুষ্ট ছেলে,
সব কিছু ছুড়ে মারে,
দিলাম যখন কানটি মলে
খোকন সোনা মান করে।
ওরে আমার খোকন সোনা
রাগ করোনা, রাগ করোনা,
এনে দেবো বাঁশের বাঁশি,
খাজা, গজা, রঙিন রশি,
নিজের কান নিজেই মলি,
তুমিও একটু দাওনা মলি।
কান ধরেছি, কান ধরেছি,
লাগলে একটু ওঠবস করছি,
রাগ করোনা ময়না পাখি
তুমিই আমার হাতের রাখি।

দুষ্ট চোখে তার
মিষ্ট মিষ্ট হাসি
দুষ্ট মিষ্ট ময়নাটাকে
বড্ড ভালোবাসি।
গামছা মাথায় কৃষক বেশ
বড্ড মায়াময়
আমার দাদু লক্ষ্মীসোনা
থাকুক হৃদয়ময়।

সেই যে ছেলে বেলা
ঘাস ফড়িঙ এর মেলা।
কখন থাকি গাছের ডালে
কখন থাকি ক্ষেতের আলে,
কখন থাকি পুকুর জলে
সময় যে যায় চলে।
হায়রে আমার ছেলে বেলা
শাপলা বিলে রঙের মেলা।

পাহাড় আমায় ডাকে
আয়রে ছুটে আয়,
সাগর আমায় ডাকে
আয়রে ছুটে আয়,
সূর্য বলে আছি আমি
বন বনানীর মায়ায়।
নোনা জলের শহর পানে
ছুটছি আমি তাই,
প্রাণের টানের এই অনুরাগ
চলছি ছুটে ভাই।
আয়রে নদী আয়রে
এবার আমি বাঁধন হারা
তোরই মতো তাইরে।

আমার ময়নার দুষ্টামী,
দেখতে এলো বোস্টমী।
বোস্টমীর ঐ একতারা,
ময়না গায় সুরছাড়া।
সা রে গা মা- পা ধা নি সা-
ময়না বল না না,
হবে না হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *