উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। পঞ্চম পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। প্রথম পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। দ্বিতীয় পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। তৃতীয় পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। চতুর্থ পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। পঞ্চম পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। ষষ্ঠ পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। সপ্তম পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। অষ্টম পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। নবম পর্ব
- উপন্যাস ।। অন্য মানুষ ।। প্রিন্স আশরাফ ।। দশম পর্ব
পঞ্চম পর্ব
রাতের চাকরির জন্য হামিদ ভাইকে আর কোথাও যেতে দেইনি। আমাদের এখানে দিনে পড়ে পড়ে ঘুমায়। আমরা ক্লাসে থাকি। আবার রাতে হামিদ ভাই চলে যায় মর্গে। মর্গে অর্থাৎ লাশ-কাটা ঘরে হামিদ ভাইয়ের তেমন কোন কাজ না। শুধু লাশের ড্রয়ারগুলো নাম্বার মিলিয়ে দেখে শুনে রাখতে হয়। মড়াগুলো থাকে ড্রয়ারের মধ্যে।
নাম্বার মিলিয়ে মড়াগুলো দেখে নেয়ার পরে হামিদ ভাইয়ের তেমন কোন কাজ থাকে না। মড়ার ঘরে আলো বেশ কম। কম পাওয়ারের বাতি জ্বলে। তাতে হামিদ ভাইয়ের সুবিধেই হয়। কোন একটা ট্রলিতে উঠে হালকা ঘুম দিয়ে নেয়। অনেক সময় দেখা যায় এক ঘুমেই রাত কাবার। মর্গে মৃতদেহ আনার জন্য ট্রলিগুলো ব্যবহার করা হয়। সেজন্য ট্রলিগুলোতে চাকা লাগানো। শুয়ে পড়লে এক জায়গায় স্থির থাকে না। বড় নড়াচড়া করে। এজন্য সে ট্রলির চার চাকার পাশে ইট দিয়ে রাখে। যাতে নড়ে চড়ে ঘুমের ডিস্টার্ব না হয়।
ইট দেয়ার পরেও ইদানীং তার ঘুমের ডিস্টার্ব হচ্ছে। রাত একটু ভারী হলে শেষ বারের মত ড্রয়ারের লাশগুলো দেখেশুনে সে লাশের ট্রলিতে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ে। লাশ-কাটা ঘরে শুলেই কি আর ঘুম আসে? কত আজে বাজে ভয়ংকর চিন্তা মাথায় আসে। কবর খুড়ে লাশ-তোলার সময় এত ভয় করত না। ইদানীং ট্রলিতে শুয়ে একটু চোখ বুজে এলেই তার মনে হয় ড্রয়ারের ভেতরের লাশগুলো নড়াচড়া করছে। ড্রয়ার ঠেলে বেরোনোর চেষ্টা করছে। প্রথম প্রথম এরকম অনুভূতি হওয়ার পর সে উঠে দেখত ব্যাপারটা কি? মড়াগুলো কি জ্যান্ত হয়ে উঠল?
কিন্তু খুলে দেখা যেত সব ঠিকঠাক আছে। কাটাকুটির জন্য রাখা লাশগুলো পড়ে আছে নিস্তেজ হয়ে। যেমনটি থাকার কথা। সবচেয়ে বেশী সমস্যা হয় ঘুমিয়ে গেলে। মরণঘুম এসে ধরে যেন তাকে। লাশের ট্রলির উপর সে নিজেও চিৎ হয়ে শুয়ে থাকে লাশের মত। যেন সে একটা মৃতদেহ। ঘুমিয়ে গেলে নিজেকে তার মৃতদেহ মনে হতে থাকে। সামান্যতম নড়াচড়া নেই। যেমন মৃতদেহের থাকে না।