গুচ্ছ ছড়া সঞ্জয় সরকার

এই নদীটা সেই নদীটা

এই যে ধারা, জলের ধারা
বইছে নিরবধি
এই ধারাটাই ছোট্টবেলার
ইচ্ছেমতি নদী।

এই নদীতে ডুব সাঁতারে
কাটত কত বেলা
বিকেল হলে উঠত জমে
মাছ-শিকারের মেলা।

পাল তোলা নাও শো শো করে
চলত স্রোতের টানে
মন হারাতাম পরাণ মাঝির
ভাটিয়ালী গানে।

শরৎ এলে হারিয়ে যেতাম
দুধ-সাদা কাশবনে
ছোট্ট বেলার এই নদীটা
আজো পড়ে মনে।

এই নদীটা আজো আছে
যায় না ভোলা ওইসব
হারিয়ে গেছে জীবন থেকে
স্বপ্ন-রঙিন শৈশব।

স্বপ্ন আমার আকাশ সমান

ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখি
স্বপ্ন দেখি জেগেও
স্বপ্ন দেখি দুষ্টুমিতে
মা যদি যান রেগেও।

স্বপ্ন দেখি লিখতে বসে
স্বপ্ন দেখি পড়ায়
স্বপ্ন দেখি গল্প-গানে
স্বপ্ন দেখি ছড়ায়।

স্বপ্ন দেখি চুপি চুপি
স্বপ্ন দেখি খেলায়
স্বপ্ন দেখি, ভাসছি আমি
স্বপ্নালোকের ভেলায়।

স্বপ্ন আমার আকাশ সমান
করবো তাকে জয়
যে জয় দেখে সবাই হবে
অবাক ও বিস্ময়।

আমি যখন একলা ঘুমাই

আমি যখন একলা ঘুমাই মা থাকে না পাশে
নানা রঙের হাজার ছবি দুই চোখেতে ভাসে।
যেমন ধরো আকাশ জুড়ে সাদা মেঘের ভেলা
মাঝখানে তার লক্ষ-কোটি জোনাক-তারার মেলা।

কিংবা ধরো নীলাকাশে উড়ছে পরী কিছু
ঘুরছি আমি হাওয়ায় ভেসে তাদের পিছু পিছু।
কখনওবা রঙধনুটা হাতের মুঠোয় ধরে
সাতটি রঙে নিজকে রাঙাই মনের মতো করে।

চাঁদের বুড়ির গল্প শুনি চাঁদের দেশে গিয়ে
কেমন করে কাটছে সুতো চরকাটাকে দিয়ে।
মা যতবার কাছে এসে হাতটি রাখে মাথায়
যাই ভুলে সব; সেই ছবিটাই ভাসে স্মৃতির পাতায়।

বৃষ্টি-দিনের রূপ

আকাশ জুড়ে মেঘ জমেছে
নামছে ভারি বৃষ্টি
খোকন সোনার সেই দিকে নেই
একটুখানি দৃষ্টি।

খেলার মাঠে লাগল যখন
বৌচি খেলার ধুম
অমনি শুরু আকাশ ভেঙ্গে
ঝুম ঝুমাঝুম ঝুম
সঙ্গে আবার মেঘের আওয়াজ
গুড়ুম গুড়ুম গুম।

মা এসে যেই ডাকটি দিল
আয়রে খোকন ঘরে
ছুটল সবাই খেলা ভেঙ্গে
যে যার মত করে।

সারা বিকেল বৃষ্টি হল
টাপুর টুপুর টুপ
জান্লা খুলে দেখল খোকন
বৃষ্টি-দিনের রূপ
ভাবল বসে কোথায় পেল
আকাশটা নলকূপ!

২ thoughts on “গুচ্ছ ছড়া সঞ্জয় সরকার

  • জুলাই ১২, ২০২০ at ৭:২৭ অপরাহ্ণ
    Permalink

    চমৎকার ছড়া!

    Reply
  • জুলাই ১৭, ২০২০ at ৯:০৩ পূর্বাহ্ণ
    Permalink

    অসাধারণ কবিতা গুচ্ছ। আমি যখন একলা ঘুমাই ছড়াটি পড়ে খুব ভাল লাগল।
    আমরা যখন আকাশ দেখি কবিরা দেখে স্বপ্ন,
    সঞ্জয়দায় কবিতা পড়ে থাকি ছড়ায় মগ্ন
    কবিতার শেষে কি আছে ভাই কবিতা পড়া শেষ
    সঞ্জয়দার কবিতাগুলোর ছড়ার মিলন বেশ।
    -পরিতোষ দাস, মদন, নেত্রকোণা।

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *