ইশরাত জাহান পপি’র কবিতা

তোমার নিমন্ত্রণে

এক বিকেলে আমায় নিয়ে গিয়ে ছিলে পরন্ত বেলা দেখার জন্য
সে বেলার পাখির কলকাকলি উদ্দীপ্ত করে ছিল হৃদয়ে আপন
ভেসেছিলাম টলটলে পানির জলচ্ছটায় তোমার নিমন্ত্রণে
এক ডালি রজনীগন্ধা সাজিয়ে ছিলাম অরণ্যে
হাতটি ধরে ছিলে আমার, জলে পরবো ভয়েই!
সে কি নিছকই ভয়, না তাড়নার ক্ষয়?
হেঁটে হেঁটে সন্ধ্যা তাড়াই চাঁদ উঠেছে বলেই,
গুড়ো গুড়ো তাঁরার পাহাড় উঠবো সেথায় যেয়েই।
ছায়ার সাথে খেলেছিলাম ভাবনা অনন্ত লগ্নে,
গান জুড়িয়ে আত্মা পুড়িয়ে যুক্ত হয়েছিলাম মনে।
মনে আছে প্রথম লিখেছিলাম সেদিন তোমায়?
পাহাড় পেরিয়ে জোছনা তলে চলেছিলাম দুর পথে
এক অরণ্যে নিমন্ত্রণ তোমার হেমন্তের সন্ধ্যে
দীপ্তি ময় হাসিটাও মন কুঠোরিতে আজো সযত্নে।

আজ আবার জোছনা রাত

বারান্দায় গ্ৰীল ধরে দাঁড়িয়ে রাত্রি দেখছি
তুমি কি ভাবছো, মনে পরে স্মৃতি ঘেরা রাত্রি?
উৎকণ্ঠার সময় ছিলো যখন তুমি অস্থির নিরব অপরাধী,
আজ সত্যিই তুমি অপরাধের দায়ে দন্ডিতো
প্রেমিক পুরুষ হওয়া সত্যি বুঝি সহজ কাজ!
বারংবার প্রেমিক তুমি হেরে যাওয়ার এই যাত্রায়
জোছনা রাতে মুগ্ধ নয়নে তোমাকে না যেতে দেয়া।
কবিতার বিড়বিড় রাত জাগানো পাখির খবর নেয়া,
আজকে আবার জোছনা রাত তোমাকেই ভুলে মনে আসা।
কবিতার কথা গুলো শুনতে ভালো লাগে আর পিছনে ফিরে চলা,
বারান্দায় দাঁড়িয়ে অন্ধকারে তারা খসে পড়ে স্বপ্ন তাড়ানোর ব্যাথা।
মনে আছে তোমাতে আমাতে সেই রাতের মোহময় আনন্দের আত্মহারা!
দুঃখের বালু কণা তুমি সাথে করে আগলে ছিলে ভাবনার সন্তরনে,
অচেনা আমরা হঠাৎই জোছনা রাতে মনে মনে আবছায়া—
কামিনীর শুভ্রতায় কি লেলিহান জোছনার অনল।
কিছু না ভেবেই আঁকড়ে ধরলে তুমি, গ্ৰাস হচ্ছি আমি সহসা!

স্বপ্ন শিহরণ

যখন উজ্জ্বল নক্ষত্র সন্ধ্যা নামার আগে ই জেগে ওঠে
মনে হয় কেউ ছুঁয়ে যায় আমার চুলের বেনী ঢেউ খেলে
সন্ধ্যায় বিলীন হওয়া তপ্ততা আমায় জানিয়ে যায় সবেগে কেউ আমারি।

যখন অন্ধকারে কোন হিম হিম আবেশ দোলা দিয়ে যায়
চন্দ্রকনা ফিসফিস করে বলে ভালোলাগার এক সিংহাসন আরোহীর কথা
যে এক মনের জানালায় ছোঁয়া দিয়ে যায় আড়াল করে সব!

যখন নীল সমুদ্রের লোনা জলে চিকচিক বালির স্নাতো শরীর দেখি,
মনে হয় কেউ উষ্ণতায় উদ্দীপ্ত করে যায় এলোমেলো খোলা চুলে।
শিহরণ কেটে যায় ভালোবাসার তীব্র সমীরন
অভিলাষে হৃদয়ের গহীনে সে কে এক বিকিরণ?

যখন চাঁদের ঈষদুষ্ণ আলোয় সাগরের রূপালী আলোয় তুমিময় হয়,
সেই আলোয় কার ছায়ায় আমি উদ্ভাসিত
তারই হাতেহাত দূর পথ ধরে চলি।
যার স্পর্শ আমি অনুভব করি সে হাত ধরে নিয়ে যায় কোন এক তেপান্তর।

যখন ক্যানভাসে স্বপ্নীল আঁকি রোমাঞ্চিত হয়ে,
বুনতে থাকি ভালোলাগার পরশ নতুন দিগন্ত জুড়ে
ডানা মেলা পাখিরা একটু খানি বসে যায় দিয়ে যায় চেনা জানা এক রোদ্দুর স্বপ্ন!

জল্প ব্যথা

কি করি বলোতো !
আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো তুমি
বিধিনিষেধের লাইন অতিক্রম করে কোনো এক দূর দেশে?
যেখানে পরিস্ফুটিত ফুলের সুঘ্রাণে শুধুই তোমাকেই পাই ঘুরে ফিরে।
সোনালী রোদ্দুর ছেয়ে আছো তুমি,
আমার অস্তিত্ব তোমার অস্তিত্বে মিশে যাচ্ছে, নিগুঢ় অন্ধকারের কিঞ্চিত আলোকচ্ছটায়।
কোন কাজেই পাইনা মন অস্থির তনুমন,
শুধুই উদ্বেগের প্রভাব চিন্তা শক্তি ছেয়ে
শঙ্কিত হৃদয় কম্পিত মন।
যে আলোয় আমরা আলোকিত নই উড়তেও পারছি না সুলগনে,
হৃদয় স্পর্শ করলো আষাঢ়ের মেঘ,
খুঁজবো মন কোথায় বলো?
বিদ্যুৎ চমকানোর আলোর ছটায় হৃদয় বলে মন ভালো নেই।
তুমিও কি আমায় খুঁজছো এমন ই করে আপন ডাঙ্গায় যেখানে কুণিক জল ছুঁয়ে যায়,
তুমি আমি পা ডুবাই, মন রাঙ্গাই জল্প ব্যাথায়
সঁপেছি প্রাণ জীবন গাঁথায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *