জয়ীতা চ্যাটার্জী’র কবিতা

তীব্র ভাবে বেজে ওঠে

বহুদূর নেমে যাচ্ছে বিস্মরণ সিঁড়ির ধাপের মতোন
পাখির বাসা হাতড়ানোর মতো অধিরতায়
বিষণ্ণ কৌতুকময় চোখ
মহা সমারহে বেলা চলে যায়
এলাচের গন্ধমাখা হাসি
আমার সঙ্গী হোক
তোমার কার্পণ্যের কাঁটাগুলো
আমার বিস্মৃতির মধ্যে গাঢ় শব্দ হয়ে ওঠে
বুকের জখম শূন্যে মগ্ন হয়ে ছোটে
আমার তোমায় ভীষণ ভয়
ছিঁড়ে যায় নীল পর্দা
ভেঙ্গে পড়ে অসংখ্য দেওয়াল বৃষ্টি পথে
ঝলসে ওঠে রক্ত মাখা ছুরি
তোমায় ভীষণ ভয় হয়।

জীবনী খেলা

আমার জীবন বরাবরই নির্ভরশীল তোমার সুঠাম কাঁধে
দ্বিপ্রহরে নিরিবিলি ঘর লোকচক্ষুর থেকে দূরে
ভালোবেসে তোমায় আমায় বাঁধে হলুদ দিনাবসানে
তোমার হলুদ মৃদু সৌরভ পরিকীর্ণ শব্দের মোহে
তোমার দুচোখ দেখেছি স্নিগ্ধ নির্ঝরে
আলো ছায়ার ঘোরে
মিটেছে প্রখর তৃষ্ণা সর্বগ্রাসী দাবানলে পুড়ে ছারখার
দব করে জ্বলে ওঠে হৃদয়ের পুরোনো বারুদ রোমস্তব্ধতা থেকে
আমরা দেখি জীবনের বন্দনায় স্পন্দিত অসীমের শেষ পার।

ঘুম

সত্যি করে বলছি ঘুমোতে যাওয়ার আগে
আমার খুব ভয় হয়
এত নিঃশব্দ শব্দ চারিদিকে
এই কালো অন্ধকারে মিশে আছে ভয়
হয়তো আজই কারও শেষ জেগে থাকা
আবার কারও বিচ্ছেদের আগে মিলনের শেষ নিঃশ্বাস
কেউ শুয়ে আছে সিলিংয়ের দিকে চেয়ে
কারোর সময় হয়েছে নিকট নিমগ্ন থেকে দূরত্বে যাওয়ার
আমি জেগে থাকি ঘুমে
জেগে থাকি সমস্ত দুশ্চিন্তা সেরে
অন্ধকারময় আমি ,
আমার নিঃশ্বাস রোজ একলা পাশ ফেরে।

রহস্য

আমার বুকের ভেতরে যে ঘর
তার ভেতরেই অন্য ঘর আছে
সমস্ত জানলা দরজা বন্ধ তার
শুধু শোনা যায়না কে কাকে একমনে ডাকে
নৈঃশব্দের ভেতর এক গভীর শব্দ
রেখে যায় এক রহস্য
জানিনা দূরত্ব থেকে কে কাকে ফেরায়
ভেঙ্গে যায় পাত্র
স্তব্ধতাময় চুম্বনে সেই ঘরের সমস্ত দরজা জানলা বন্ধ
রেখে যায় কেবল এক বুক রহস্য।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *