যুবক অনার্যর কবিতা

কমরেড মান্তু

৩৬ র‌্যাংকিন স্ট্রিট- মধ্যদুপুর

কয়েক রাউন্ড অতর্কিত বুলেট

ঝাঁঝরা করে দিলো মান্তুর সমস্ত শরীর

মুহূর্তে চারপাশ ফাঁকা যেন বাঘশূন্য বনভূমি

সাটার-নামানো সন্ত্রস্ত আওয়াজ

গণমাধ্যম ক্যামেরা সাংবাদিক প্রতিবেদন

আকাশের দিকে মুখ করে পড়ে থাকা

মান্তুর অবাধ্য লাশ

কিছুক্ষণ পর সবকিছু স্বাভাবিক

যেন চেনা গল্প পৃথিবীর

সাটার-ওঠানো নৈমিত্তিক আওয়াজ

৩৬ র্যাংকিন স্ট্রিট- পড়ন্ত দুপুর

মান্তু বোলেছিল: ‘আমি মানি না’

মান্তু মেনে নেয় নি বোলেই পৃথিবী এখনো সুন্দর

কবিকে হত্যা করার পর

উদ্ধত বেয়নেটের কাছে আত্মসমর্পণ না করার অপরাধে

প্রথমে ওরা কেটে নিল কবির দুটি হাত

তারপর দুটি পা

এইবার কেটে নিল জিভ

উপড়ে ফেললো দুটি চোখ

হত্যা করার পর মনে হলো-

কবির হাত দুটি লিখছে কবিতা আর

পা- মিছিলে মেখে নিচ্ছে ধূলো

জিভ তার গাইছে গান

মুক্তির

চোখের গর্ত থেকে ছিটকে বেরুচ্ছে স্বপ্ন

                                                    স্বাধীনতার

মনে হলো- জীবিত কবির চেয়ে মৃত কবির রক্ত

বেয়নেটের বিরুদ্ধে অনেক বেশি লাল

আরো একটি লাশ

আরো একটি লাশ

অপরাধ: বিরুদ্ধ মতবাদ

অথচ মানুষেরা যা-কিছু করছে

ভবিষ্যৎ না জেনেই

যেমন: পাখি গান গায়

অডিয়েন্স প্রত্যাশা না করেই

এবং ‘পাখি সব করে রব’

তবু রাত্রি পোহাইলো না

যেমন: সামান্য জল

জলের ভেতরে পোকা

পোকাগুলো ক্রমশ মানুষ

মানুষের বিরুদ্ধে মানুষ

চিরদিন

না বুঝেই যে, কোনো মতবাদই

ধ্রুব নয়

ধ্রুব কেবল পরিবর্তনতা

One thought on “যুবক অনার্যর কবিতা

  • ডিসেম্বর ৮, ২০২০ at ৯:৩৩ অপরাহ্ণ
    Permalink

    ভালো কবিতা। শুভেচ্ছা কবি যুবক অনার্যকে।

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *